এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৪ ফেব্রুয়ারী : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার পারুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিগত প্রায় সাত দশক ধরে নিয়ম মেনে সরস্বতী পূজো হয়ে আসছিল । ব্যতিক্রম শুধু এবছর ৷ যার কারনে চরম ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের অবিভাবকরা । সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটল আজ মঙ্গলবার ৷ স্কুল খুলতেই প্রধান শিক্ষক অমিত ভট্টাচার্যকে ঘিরে ধরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা ৷ শুধু তাইই নয়,আজ ছেলে মেয়েদের স্কুলে পর্যন্ত পাঠাননি তারা । ফলে তাই বন্ধ থাকে পঠনপাঠন ও মিড ডে মিল। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দাবি,পুজোর খরচ করার মত পর্যাপ্ত টাকা স্কুলের ফান্ডে না থাকায় সরস্বতী পুজো করা সম্ভব হয়নি । তবে তার এই দাবি মানতে চাননি অবিভাবকরা ৷ তাদের পালটা যুক্তি যে তারা চাঁদা তুলে পূজোর খরচা জুটিয়ে দিতেন । কিন্তু প্রধান শিক্ষক স্কুলের ফান্ডের বাস্তব অবস্থার কথা জানাননি বলে অভিযোগ তাদের । তবে অবিভাবকদের এই অভিযোগ মেনে নিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক অমিত ভট্টাচার্য বলেন, ‘স্কুলের ফান্ডের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন ছিল। তাহলে হয়তো গ্রামবাসীরা মিলে চাঁদা দিয়ে পুজো করতে পারতেন। আলোচনা না করা আমার ভুল হয়েছে ।’
জানা গেছে,কাটোয়ার পারুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে৷ বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪৩ জন। শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন তিনজন । স্কুলের জন্মলগ্ন থেকেই প্রতি বছর স্কুলে সরস্বতী পূজো হয়ে আসছে । নিয়ম মেনে পড়ুয়াদের স্কুলে অঞ্জলি দিতে নিয়ে যেতেন তাদের মায়েরা ৷ এবারেও তারা আশা করেছিলেন যে স্কুলে সরস্বতী পূজো হবে এবং ছেলেমেয়েদের অঞ্জলি দিতে নিয়ে যাবেন । কিন্তু তাদের সেই আশাপূরণ হয়নি । এক পড়ুয়ার মা গৃহবধূ বিথিকা দাস বলেন,’আমাদের ছেলেমেয়েরা আশা করেছিল স্কুলের পুজোয় গিয়ে অঞ্জলি দেবে।আনন্দ করবে । কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ এলাকার মানুষের ভাবাবেগকে গুরুত্ব দেননি ।’ সনৎ মন্ডল নামে একজন পড়ুয়ার বাবা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,’জন্মলগ্ন থেকে বিগত ৭০ বছর ধরে স্কুলে সরস্বতী পূজো হয়ে আসছে । এক বছরের জন্যও পুজো বন্ধ হয়নি। আর এবার এই প্রথম হঠাৎ করে আমাদের না জানিয়েই পুজো বন্ধ করে দেওয়া হল । স্কুলের ভাড়ারে টাকা নেই সেটা প্রধান শিক্ষক । আমরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে পুজোর খরচ তুলতাম । কত আর খরচ হত ? ৫-৭ হাজার টাকা । কিন্তু তিনি আমাদের না জানিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছেন ।’
জানা যায়, সোমবার চারিদিকে যখন সরস্বতী পূজো হচ্ছে, অন্যদিকে তখন পারুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলতে দেখে ক্ষোভ ফুঁসছিলেন গ্রামবাসীরা । আজ প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসতেই তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে । ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় প্রধান শিক্ষক অমিত ভট্টাচার্যকে । একজনও পড়ুয়া স্কুলে না আসায় বন্ধ হয়ে যায় স্কুল ।।