এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৯ নভেম্বর : গুরু নানক জয়ন্তী উপলক্ষে বিক্ষোভকারী কৃষকদের স্বার্থে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি, দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন । প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পাঁচ দশকের জনজীবনে আমি কৃষকদের অসুবিধা ও চ্যালেঞ্জ খুব কাছ থেকে অনুভব করেছি । কৃষকদের অবস্থা উন্নয়নের জন্যই এই দেশে তিনটি কৃষি আইন আনা হয়েছিল । উদ্দেশ্য ছিল দেশের কৃষকরা, বিশেষ করে ক্ষুদ্র কৃষকরা যেন আরও শক্তি পায় । তাঁরা যেন তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দাম পান এবং পণ্য বিক্রির জন্য তাঁদের সামনে আরও বেশি বিকল্প রাস্তা খোলা থাকে ।’ তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে দেশের কৃষক, দেশের কৃষি বিশেষজ্ঞ, দেশের কৃষক সংগঠনগুলো লাগাতার এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন । এর আগেও অনেক সরকার এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেছে । এবারও সংসদে এনিয়ে আলোচনা হয়েছে, বিচার বিশ্লেষণ হয়েছে । শেষে তিন কৃষি আইন আনা হয়েছে ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন,’আমাদের সরকার কৃষকদের কল্যাণে, বিশেষ করে ক্ষুদ্র কৃষকদের কল্যাণে, দেশের কৃষি জগতের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, গ্রামের দরিদ্র মানুষের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য, পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে, নিষ্ঠার সাথে, কৃষকদের উদ্দেশ্যে, এই আইনটি একটি ভাল উদ্দেশ্য এনেছিলাম । কিন্তু হয়তো আমরা এই আইন সম্পর্কে কিছু কৃষককে বোঝাতে পারিনি । কৃষি অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানী,প্রগতিশীল কৃষকরাও তাঁদের কৃষি আইনের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘আজ আমি সমগ্র দেশবাসীকে বলতে এসেছি যে, আমরা তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । চলতি মাসের শেষ দিকে সংসদের অধিবেশনে শুরু হতে চলেছে । তখন আমরা এই তিনটি কৃষি আইন বাতিলের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব ।’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কৃষি বাজেট পাঁচ গুণ বাড়ানো হয়েছে । প্রতি বছর ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি কৃষি খাতে ব্যয় হচ্ছে ।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর এদিনের ভাষনে আন্দোলনরত কৃষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার আহ্বানও জানান । কিন্তু ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত এখনই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণার মুডে নেই । তিনি বলেন, ‘এখনই আন্দোলন বন্ধ করা হবে না । সংসদে কৃষি আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো ।’ সেই সঙ্গে তিনি কেন্দ্র সরকারের কাছে দাবি করেছেন, ‘এমএসপির (MSP) পাশাপাশি কৃষকদের অন্যান্য সমস্যাগুলি নিয়েও আলোচনায় আসুক কেন্দ্র সরকার ।’।