দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২১ জানুয়ারী : ভারতের মহানতম স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান আজও রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে । বিজেপির শাসনকালের প্রথম দিকেই নেতাজী সম্পর্কীয় বেশ কিছু ক্লাসিফায়েড ফাইল প্রকাশ্যে এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । কিন্তু নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্যের উন্মোচন হয়নি । যদিও এখনো নেতাজী সম্পর্কীয় বেশ কিছু ‘সিক্রেট ফাইল’ কেন্দ্রের হাতে আছে বলে শোনা যায় । যদিও এযাবৎ তা প্রকাশ্যে আনেনি কেন্দ্র সরকার । আর এজন্য নেতাজীর পরিবারের অভ্যন্তরের মত বিরোধকেই দায়ি করলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নাতনি জয়ন্তী রক্ষিত । শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরে নেতাজীর ১২৬ তম জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি । কাটোয়ার রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত একটি সেমিনারে অংশ নিয়ে জয়ন্তী রক্ষিত বলেন,’নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে বসু পরিবারের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে । এই পারিবারিক মতবিরোধের মধ্যে ঢুকতে চাইছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তাই তাঁকে নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ আগ্রহী হতে দেখা যাচ্ছে না ।’
তিনি আরও বলেন,আমরা গতবছর জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু তার উত্তর আজও পাইনি। এর কারণ হিসাবে আমার মনে হয় বসু পরিবারের মধ্যেই মতবিরোধের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আসতে চাইছেন না ।’
সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় ইংরাজি সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকারে নেতাজীর ভ্রাতুষ্পুত্র চন্দ্র কুমার বসু দাবি করেছিলেন, নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য সম্পর্কীয় অধিকাংশ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রক্ষিত চিতাভস্ম নেতাজীরই । এনিয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে তাইহোকু বিমান দূর্ঘটনাতেই নেতাজীর মৃত্যু হয়েছিল । তাই তিনি ওই চিতাভস্ম ভারতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান ।
তাঁর ওই দাবি সম্পর্কে জয়ন্তীদেবী বলেন,’আমাদের চিঠির আগে চন্দ্র কুমার বোস প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যুর পর যে চিতাভষ্ম রক্ষিত আছে তা যেন বসু পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হোক । যাতে শ্রাদ্ধানুঠান করা যায় । কিন্তু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়েছিল বলে আমরা মানি না। সেজন্য আমদের তরফ থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম চিতাভস্ম যেন দেশে না আনা হয় ।’
নেতাজী সুভাচন্দ্র বোসের নাতনির বক্তব্য শুনুন :-
প্রসঙ্গত, নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে বসু পরিবারের মত বিরোধ দীর্ঘদিনের । দেশের আপামর নেতাজীপ্রেমী মানুষের মতই বসু পরিবার একটি অংশ বিশ্বাস করেন যে তাইহোকু বিমান দূর্ঘটনায় আদপেই নেতাজীর মৃত্যু হয়নি । তার সপক্ষে বহু নথি তুলে ধরাও হয়েছে । কিন্তু কোনো এক অজানা কারনে আজও বসু পরিবারের অন্য অংশকে বিমান দূর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যুকে সত্য বলে প্রমাণ করতে বারবার সচেষ্ট হতে দেখা যায় ।।