এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,৩০ জুন : কুমিল্লার মুরাদনগরে ২৫ বছরের হিন্দু বধূকে ধর্ষণ ও নগ্ন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত খালেদা জিয়ার দল বিএনপি নেতা ফজর আলীসহ ৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে । এদিকে নির্যাতিতাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার দল ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছেন ব্লিটজের সম্পাদক সালহা উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী । তিনি এক্স-এ নিযাতিতার বিক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন,’জরুরি মনোযোগ দেওয়া হোক!এই ভিডিওতে, দুই সন্তানের জননী এবং হিন্দু মহিলা গীতালি রানী দাস (২১) বলছেন, তিনি এখন বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় দায়ের করা মামলাটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী মুসলিম এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতাদের চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন। তার প্রবাসী স্বামীও হুমকি এবং চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন।’
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে গুজব ছড়ানো হয় যে, দীপালী রানী তার দায়ের করা ধর্ষণের মামলাটি তুলে নিয়েছেন এবং ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তার বিরুদ্ধে পরকীয়ার মতো অবমাননাকর অভিযোগও তোলা হচ্ছিল। এই ধরনের মিথ্যাচারে ভুক্তভোগীর পরিবার এবং স্থানীয় সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে, কিছু হলুদ সাংবাদিক এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে এবং অভিযুক্তদের রক্ষা করতে এই ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করে বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা।
তবে কুমিল্লার মুরাদনগরে আলোচিত দীপালী রানী ধর্ষণ মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে—এমন খবরকে পুরোপুরি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। ভুক্তভোগী দীপালী রানী মামলা প্রত্যাহার করেননি, বরং ২৯ জুন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তিনি আরও একটি নতুন মামলা দায়ের করেছেন। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জনাব জাহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, “দীপালী রানীর মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি আজ থানায় এসে নতুন একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।”
আজ সোমবার বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর একটি দল কুমিল্লা মুরাদনগরের নির্যাতিতার পাশে দাড়ান এবং তাকে মামলা প্রত্যাহার না করার জন্য বলা হয়৷ নির্যাতিতা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে আমি মরব তবু মামলা প্রত্যাহার করব না। হিন্দু মহাজোট এর পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয় তার হাতে এবং ভবিষ্যতে আইনগত সাহায্য প্রদান করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয় । এই সময় স্থানীয় পুজা পরিষদের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে আজও আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় গতকাল রবিবারও তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “ফজর আলী আহতাবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই কথা বলে আদালতকে কালই জানানো হইছে। পরে কোর্ট অর্ডার দিয়ে জেল পুলিশ পাঠিয়ে দিছে ওখানে (হাসপাতালে )।”
অভিযুক্ত ফজর আলীকে ঘটনার রাতেই জনগন মারধর করেছিল। ওইসময় তার হাত-পা ভেঙে গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিবার ধৃত অন্য আসামিদের পর্ণোগ্রাফি আইনের মামলায় আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাদের জামিন নাকচ করে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এর আগে রোববারই কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান সাংবাদিকদের জানান যে, ঘটনার মূল অভিযুক্তসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।।