প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ ফেব্রুয়ারী : পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে ফাল্গুনেও অঝোরে ঝরলো বৃষ্টি।তাও আবার যে সে বৃষ্টি নয়,একেবারে শিলাবৃষ্টি।তারসঙ্গে তেড়ে বইলো ঝড়।বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এমন বৃষ্টিপাত শুরু হতেই মাথায় হাত পড়ে যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার আলু চাষীদের। জমিতে জল জমে যাওয়ায় তাঁরা ঘর দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন ।
আলু পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্যতম কৃষিজ ফসল। অন্যান বছরের মত এবছরও জেলায় বহু চাষি আলু চাষ করেছেন। কোথাও কোথাও জমি থেকে আলু তোলার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সাত সকালে জামালপুর সহ একাধীক জায়গায় শুরু হয়ে যায় ঝড় । তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি।সেই বৃষ্টির জলে ডোবে আলু জমি।জামালপুর ব্লকের শিয়ালী, কোরা, মাঠশিয়ালী, অমরপুর,মুইদূপুর,উজিরপুর, রেশলাতপুর,আঁটপাড়া প্রভৃতি এলাকায় শিলাবৃষ্টির দাপট যেন একটু বেশী ছিল । তার কারণে এইসব এলাকার চাষীদের কার্যত মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে।
শিয়ালী গ্রামের আলু চাষি অচিন্ত চক্রবর্তী ও শ্যামসুন্দর দে বলেন,মোটা টাকা খরচ করে এবছর আলু চাষ করতে হয়েছে। কিছুদিন আগে কিছু জমির আলু বিক্রি করেছি।কিন্তু লাভজনক দাম পাই নি। চাষের খরচ টুকুও ওঠেনি। আশা ছিল বাকি জমির আলু মাঠ থেকে বিক্রী করার সময় একটু ভাল দাম পাবো । কিন্তু এদিন যে ভাবে ব্যাপক হারে শিলাবৃষ্টি হল তাতে মাঠের আলু সব জলের তলায় চলে গিয়েছে। শুধু জল হলে আলু হয়তো বাঁচানো যেত কিন্তু শিলা বৃষ্টি হওয়ার কারণে জমির আলু আর বাঁচানো যাবেনা।
অপর চাষী শাহনওয়াজ রহমান, সুকুমার রুইদাস, গুরুপদ দাসেদের কথায়,,অসময়ের শীলাবৃষ্টি তাঁদের আলু চাষে প্রভূত ক্ষতি করে দিল। শিলাবৃষ্টিতে জমির যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে খাবার আলু টুকুও চাষিরা পাবে না।গ্রামের পর গ্রামের আলু চাষিরা তাঁদের জমির অবস্থা দেখে চোখের জল ফেলছেন । অনেক চাষী দেনা করে আলু চাষ করে ছিলেন।দেনা কি ভাবে শোধ করবেন সেটা ভেবেই চাষিদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। সরকার পাশে না দাঁড়ালে চাষীরা আর ঘুরে দাড়াতে পারবেন না বলে শাহনওয়াজ রহমান জানিয়েছেন।
যদিও জেলা (পূর্ব বর্ধমান) কৃষি আধিকারিক নকুলচন্দ্র মাইতি অবশ্য বৃষ্টি হয়েছে মানেই আলু চাষ শেষ হয়ে যাবে,এমনটা মানতে চান নি। তিনি বলেন ,আলু মাটির নিচের ফসল । এই বৃষ্টিতে যে এলাকার আলু চাষের জমিতে জল জমে থাকবে সেই জমিতেই শুধু মাত্র ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে। জামালপুরে কি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা ব্লকের কৃষি দফতরের টিম শুক্রবার খতিয়ে দেখবে। তারা রিপোর্ট পাঠালে বাস্তব অবস্থা বোঝা যাবে ।।