প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ ডিসেম্বর : বাংলা অব্যাহত টাকা উদ্ধারের ঘটনা । ইডি(ED) কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও বিপুল পরিমান সোনার গহনা উদ্ধার করেছিল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখার্জির কলকাতার ফ্ল্যাট থেকে। আর এবার বাংলার পুলিশ এক গাঁজা কারবারী মহিলার বাড়ি থেকে উদ্ধার করলো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। এছাড়া পুলিশ পেয়েছে বিপুল পরিমাণ গাঁজা । যা জেনে স্তম্ভিত পূর্ব বর্ধমানের মেমারি শহরের বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, পুলিশি অভিযানের দৌলতে মামারিবাসী অর্পিতার অনুরুপ বাংলার আর এক মহিলার অবৈধ দৌলতের ভাঁড়ারের খবর জানতে পারলো।
গাঁজার গারবার চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ধন দৌলতের অধিপতি হয়ে ওঠা মহিলার নাম সংগীতা সাহানি।পূর্ব বর্ধমানের মেমারি পৌরসভার-১ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্টিপাড়ায় তার বাড়ি । বুধবার দুপুরে জেলার এওজি (SOG)টিম কে সঙ্গে নিয়ে মেমারি থানার ওসি প্রীতম বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশ দল সংগীতা সাহানির বাড়িতে হানা দেয়।বাড়িতে ঢুকেই ছাগাল রাখা থাকা সরু গলির মত জায়গাটির অস্বাভাবিকতা দেখে পুলিশ থমকে যায়। ছাগল রাখার জায়গায় থাকা গাছের ডাল পাতা সরানো হলে বড় বড় দু’টি বস্তা পুলিশ দেখতে পায়।দুটি বস্তার একটিত বিভিন্ন ওজনে গাঁজা পুরিয়া করে ভরে রাখা অবস্থায় পুলিশ দেখতে পায়। অপর বস্তা থেকে মেলে কেজি কেজি গাঁজা। সেইসব বস্তা তুলে নিতে গিয়ে একটা ’ঢাকনা’ চোখে পড়ে পুলিশের।সেই ঢাকনা খোলার পরে পুলিশ দেখে, মেঝের ভিতর গর্ত করে সেখানে কালো রঙের মস্তবড় একটা ব্যাগ রাখ রয়েছে।ব্যাগটি খুলতেই পুলিশের চোখ কপালে ওঠে। পুলিশ দেখতে পায় ব্যাগের ভিতরে থাকে থাকে সাজানো রয়েছে টাকার বান্ডিল। শুধু বিপুল পরিমাণ টাকাই নয়,সংগীতা সাহানির বাড়ি থেকে পুলিশ মোট সাড়ে ৪৭ কেজি গাঁজাও পাও। টাকা গোনার জন্য পুলিশ স্থানীয় ব্যাঙ্কে খবর দেয় ।ব্যাঙ্ক কর্মীরা টাকা গোনার মেশিন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে যায় । গণন শেষে ব্যাঙ্ক কর্মীরা জানিয়ে দেয় উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ৪০ লক্ষ ৮৭ হাজার ২৮০ টাকা। ওই টাকা ও গাঁজা বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি পুলিশ সংগীতা সাহানিকে গ্রেপ্তার করেছে । তাকে বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে পুলিশ পেশ করবে ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার রাতে এ নিয়ে মেমারি থানায় সংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন ,পুলিশের সফল অভিযানে বিপুল পরিমাণ টাকা ও গাজা উদ্ধার হয়েছে। ঘটনায় সংগীতা সাহানি নামে এক মহিলা গাঁজা কারবারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । অতিরিক্ত পুলিল সুপার জানান ,“গাঁজার কারবার চালানোর দায়ে সংগীতা সাহানির মাও পূর্বে গ্রেপ্তার হয়েছিল । এদিন সংগীতা সাহানির বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও টাকা বাজেযাপ্ত করা হয়েছে।গাঁজা কোথা থেকে আসতো,কোথায় বিক্রী করা হত ,সেসব নিয়েও তদন্ত চালানো হচ্ছে।এই চক্রে আরও কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ।
সংগীতা সাহানির প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন,’মায়ের হাত ধরে সাংগীতাও গাঁজা কারবারে হাত পাকিয়ে ফেলেছিল। বাড়িতে বসেই সংগীতা রমরমিয়ে গাঁজার কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল। এলাকার অল্প বয়সী ছেলেরা গাঁজার নেশায় আশক্ত হয়ে পড়ছিল । নেশার দ্রব্য কেনার জন্য বহিরাগতদের আনাগোনা পাড়ায় লেগেই থাকতো’।ক্ষোভ উগরে দিয়ে এলাকাবাসী বলেন,’পাড়ায় গাঁজার কারবার করা নিয়ে প্রতিবাদ করলে উল্টে সংগীতা গরম দেখাতো । এলাকার নেতা নেত্রী থেকে শুরু কর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ,কেউই সংগীতার গাঁজার কারবার বন্ধ করার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। দেরিতে হলেও পুলিশ গাঁজা কারবারী সংগীতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।এবার হয়তো এলাকায় সুস্থ পরিবেশ ফিরবে ।’।