প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৯ আগস্ট : এ যেন রক্ষক’ই ভক্ষক ! ফেক প্রোফাইল খুলে তাতে এক মহিলার ব্যক্তিগত তথ্য ও বিকৃত ছবি পোস্ট করার অভিযোগ উঠলো খোদ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই পুলিশ অফিসারের নাম শেখ রহমত। বর্তমানে তিনি আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের অধীন রাণিগঞ্জ থানায় কর্মরত। বৃহস্পতিবার তদন্তকারী অফিসারের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি না হয়ে বুধবার তিনি বর্ধমান সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পুলিশ মহল ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে,’অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার শেখ রহমত আদালতে আত্মসমর্পন করার পর তার জামিন চেয়ে আইনজীবী পার্থ হাটি সওয়াল করেন। আদালতে হাজির হয়ে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের জামিনের বিরোধীতা করেন বর্ধমানের দেওয়ানদিঘির সার্কেল ইন্সপেক্টর তথা তদন্তকারী অফিসার রাজকুমার ঘোষ। তিনি আদালতে বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। তাকে জামিন দেওয়া হলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে। সাক্ষীদের ভয় দেখাতে পারে অভিযুক্ত ।একই ভাবে সরকারি আইনজীবীও অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের জামিনের বিরোধিতা করেন। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে পদের অপব্যবহার করে তদন্তকে প্রভাবিত না করা এবং সপ্তাহে একদিন তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরার শর্তে সিজেএম ধৃত অভিযুক্তর জামিন মঞ্জুর করেন ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,’বছর খানেক আগে দেওয়ানদিঘি থানার তালিতের এক গৃহবধূর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় পুলিশ অফিসার শেখ রহমতের ।পরে দু’জনের মধ্যে ভাব-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাস খানেক আগে দু’জনের । সম্পর্কের অবনতি হয় । অশান্তিও হয়। মহিলার দাবি,তিনি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে তাঁকে রহমতের হুমকির মুখে পড়তে হয়।
এমত পরিস্থিতিতে গত ৩ আগষ্ট ওই মহিলা স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন । মহিলা পুলিশকে অভিযোগে জানান,তিনি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় তাঁকে রহমত হুমকি দেয়। তাঁর নামে একটি ফেক প্রোফাইল খোলা হয়। সেখানে তাঁর নম্বর, ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি শেয়ার করা হয়। পরে ফেসবুকে আরও একটি প্রোফাইল খোলা হয়। সেখানে তাঁর বিকৃত ছবি পোস্ট করা হয়। এতবড় একটা কাণ্ড নিয়ে মহিলা থানায় ডায়েরি করলেও
কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এরপরই মহিলা বর্ধমান সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে কেস রুজু করে তদন্তে নামে সাইবার থানা। প্রাথমিকভাবে মহিলার অভিযোগের সারবত্তা মেলে।এরপরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠিয়ে অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টরকে বৃহস্পতিবার ডেকে পাঠান তদন্তকারী অফিসার।তার আগেই বুধবার তিনি বর্ধমান আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।।

