এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৮ নভেম্বর : ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখানোর নাম করে ডেকে এক চালকল মালিকের চারচাকা গাড়িসহ শরীরে পরে থাকা যাবতীয় সোনার অলঙ্কার ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল পান্ডাকে গ্রেপ্তার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম জিয়ারুল শেখ ওরফে টুকাই। তার বাড়ি ভাতার থানার বামশোর গ্রামে । পুলিশ জানিয়েছে,এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে ।
জানা গেছে,ভাতারের ওই ছিনতাইবাজ চক্রের কবলে পড়া ওই চালকল মালিকের নাম প্রাণগোপাল মণ্ডল । মঙ্গলকোট থানার বামুনগ্রামের বাসিন্দা তিনি । আসলে,ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন তিনি । মাঝে মধ্যে পাত্রীর সন্ধান দিতে ফোনও আসছিল । তারই মাঝে গত আগষ্ট মাসের শেষের দিকে একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তার কাছে । ভালো পাত্রী আছে বলে জানানো হয় প্রাণগোপাল মণ্ডল নামে ওই চালকল মালিককে । বেশি দুরও নয়, পার্শ্ববর্তী ভাতার থানার ধাধলসা গ্রামে আসতে বলা হয় তাকে । কিন্তু তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে ফোনটি একটি ছিনতাইবাজ চক্র থেকে করা হয়েছে । যথারীতি প্রাণগোপালবাবু সেখানে যান । আর তারপরের অভিজ্ঞতা আজও ভুলতে পারেননি তিনি ।
জানা যায়,পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রাণগোপাল মণ্ডল জানান যে কথামত তিনি ওইদিন ভাতারের ধাধলসা গ্রামে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে নিজের চারচাকা গাড়িতে চড়ে গিয়েছিলেন । আর তিনি যেতেই জনা ছয়েক অপরিচিত ব্যক্তি তার গাড়িটি হাইজ্যাক করে । তাকে সেই গাড়িতে করেই মুরাতিপুর গ্রাম পেড়িয়ে ক্যানেলপুলের কাছে নিয়ে আসা হয়৷ সেখানে তার কাছ থেকে সোনার আংটি,হার সহ যাবতীয় অলঙ্কার কেড়ে নেয় ওই দুষ্কৃতী দলটি । এখানেই শেষ নয়, এরপর তাকে বামশোর গ্রামে একটি গোপন ডেরায় নিয়ে এসে আটকে রাখা হয় । একজন মহিলাকে নিয়ে এসে তাকে অসংলগ্ন অবস্থায় তার পাশে বসিয়ে ছবি তোলে দলটি । সেই ছবি দেখিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে এবং পাশাপাশি চলে মারধর । যদিও পরের দিন সকালে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে ।
জানা যায়, ফিল্মি কায়দায় এই ছিনতায়ের আতঙ্ক কাটতে কয়েকদিন সময় লাগে চালকল মালিক প্রাণগোপাল মণ্ডলের । ঘটনার কয়েকদিন পর তিনি ভাতার থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তার অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ । শেষ পর্যন্ত এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় বামশোর গ্রামের জিয়ারুল শেখকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ । এদিকে একটা গ্রাম্য এলাকার মধ্যে এতবড় একটা দুষ্কৃতীচক্র গজিয়ে ওঠায় বিস্মিত এলাকার বাসিন্দারা ।।
Author : Eidin.

