প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২২ এপ্রিল : নতুন ধুতি পঞ্জাবি পরে সেজেগুজে মাথায় টোপর আর গলায় রজনীগন্ধার মালা ঝুলিয়ে বর বাবাজীবন এসেছিল নাবালিকাকে বিয়ে করতে। কিন্তু ছাদনাতলায় পৌছে যাওয়া পুলিশ আর সেই বিয়ে হতে দেয়নি। আইনী গেড়োয় পড়ে যাওয়া বর বাবাজীবন বিশ্বনাথ বিশ্বাস কে শেষপর্যন্ত পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হতে হয় নাবালিকাকে বিয়ে করতে আসার অপরাধে ।বৃহস্পতিবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে । বিয়ে করতে এসে বর বাবাজীবনকে এমন আইনি ঝঞ্ঝাটে পড়তে হওয়ায় হতাশ কনে পক্ষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , বর বাবাজীবন বিশ্বনাথ বিশ্বাসের বাড়ি বর্ধমান ২ ব্লকের শক্তিগড় থানার কুমিরকোলা এলাকায়। ।নাবালিকা পাত্রীও একই ব্লকের বাসিন্দা । অভিযোগ অনেকটা চুপিসারেই বিয়ের যাবতীয় আয়োজন সেরে ফেলেছিল দুই পরিবার । বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমানের নাদুর এলাকার একটি কালি মন্দিরে শুরু হয়ে গিয়েছিল নাবালিকা পাত্রীর সঙ্গে বর বাবাজীবনের বিয়ের যাবতীয় প্রস্তুতি। দুই পরিবারের সদস্য ,পুরোহিত সবাই মন্দিরে পৌছেও গিয়েছিলেন। সেই খবর গোপন সূত্রে পৌছে যায় বর্ধমান থানার পুলিশের কাছে ।এরপরেই পুলিশ দ্রুত ওই মন্দিরে পৌছে যায় ।ছাদনাতলায় দুই পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে বর বাবাজীবন যে পাত্রীকে বিয়ে করতে মন্দিরে হাজির হয়েছে তার বয়স ১৭ বছর ।পাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাঁকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর নাবালিকাকে বিয়ে করতে আসার অভিযোগে পুলিশ বিয়ের আসর থেকেই বর বাবাজীবনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ শুক্রবার গলায় রজনীগন্ধার মালা ঝোলানো ও ধুতি পঞ্জাবি পরিহিত বর বাবাজীবন কে বর্ধমান আদালতে পেশ করে ।
এই ঘটনার কথা শুনে বর্ধমান ২ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা বলেন ,নাবালিকার বিয়ে দেওয়া ও নাবালিকাকে বিয়ে করা যে আইনত অপরাধ তা নিয়ে বহু প্রচার চালানো হয়েছে । প্রতিটি স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরাও এই বিষয়ে সচেতন করা হয় ।এমনকি নাবালিকার বিয়ে না দেওয়া নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরাও নিজ নিজ এলাকায় সচেতনতা প্রচার চালায় ।এত কিছুর পরেও কিছু পরিবার কি করে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখানোর স্পর্ধা দেখাতে যান সেটাই আশ্চর্য্যের । নাবালিকার বিয়ে রুখে দেওয়ার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শক্তিগড়ের বাসিন্দারা ।।