প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৪ অক্টোবর : বাংলায় ফের আক্রান্ত পুলিশ। আবারও ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর। মাত্র নয় দিনের ব্যবধানে জামালপুরের চক্ষণজাদি গ্রামের পর উজিরপর গ্রামে বেপরোয়া হামলা আক্রমণ চললো পুলিশের উপর।শুক্রবার রাতে ইট দিয়ে মাথায় মেরে পুলিশ কনস্টেবল শুভেন্দু গায়েনকে মারাত্মক জখম করার অভিযোগ ওঠে উজিরপুর গ্রামের দুই যুবক সমর বাউরি ও মঙ্গল বাউরি-র বিরুদ্ধে । মাথায় চোট পেয়েই পুলিশ কনস্টেবল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জ্ঞান হারান । তাকে উদ্ধার করে সহকর্মীরা প্রথমে নিয়ে যান হুগলীর তারকেশ্বরের একটি হাসপাতালে।শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে রাতেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই পুলিশ কনস্টেবল কলকাতার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে ইট দিয়ে মাথায় মেরে পুলিশ কনস্টেবলকে জখম করার ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েত এলাকার উজিরপুর গ্রামে পৌছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এলাকায় তন্ন তন্ন করে খোঁজ চালিয়ে পুলিশ অভিযুক্ত দুই যুবক সমর বাউরি ও মঙ্গল বাউরিকে পাকড়াও করে থানায় নিয়ে আসে। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে।শনিবার দুই ধৃতকে পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে । বিচারক দুই ধৃতকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,অনান্য জায়গার মতো উজিরপুর গ্রামেও শুক্রবার রাতে ছিল প্রতিমা নিরঞ্জন। নিরঞ্জন পর্ব যাতে নির্বিঘ্নে সমাপ্ত হয় তা দেখার জন্য কয়কজন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল শুভেন্দু গায়েন। প্রতিমা নিরঞ্জন শেষ হলে উজিপুর গ্রাম থেকে ফিরে আসছিলেন তিনি । অভিযোগ,ওই সময় এলাকার বাসিন্দা সমর বাইরি,মঙ্গল বাউরি এবং আরো একজন মদ্যপ অবস্থায় আচমকাই বাঁশ নিয়ে পুলিশ কনস্টেবল শুভেন্দু গায়েনের উপর চড়াও হয়।দু’হাতে বাঁশে বাড়ি যখন আটকাচ্ছিলেন শুভেন্দু তখনই মদ্যপ অবস্থায় থাকা ওই যুবকদের ভারি ইট দিয়ে কনস্টেবল শুভেন্দু গায়েনের মাথায় সজোরে মারে । তাতেই মারাত্মক জখম হয়ে শুভেন্দু গায়েন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বলে পুলিশের দাবি ।
তবে পুলিশের উপর এমন হামলা আক্রমণের ঘটনা এই প্রথম জামালপুরে ঘটলো এমনটা অবশ্য নয়। জামালপুরবাসীর দাবি,মাত্র নয় দিন আগের রাতে বেরুগ্রাম অঞ্চলের চক্ষণজাদি গ্রামে পুলিশের উপর বর্বোরোচিত হামলার ঘটনা ঘটে । অভিযোগ,ওইদিন বেরুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি শেখ শাহাবুদ্দিন ওরফে দানির নেতৃত্বে তার অনুগত প্রায় শতাধিক ব্যক্তি গাড়ি আটকে পুলিশের উপর চড়াও হয়।মারধর করে পুলিশ কর্মীদের হত্যার চেষ্টার পাশাপাশি তারা ওই দিন পুলিশ গাড়িতেও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাতেও পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ধরপাকড় অভিযানে নামে । বেশ কয়েকজন হামলাকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারলেও মূল অভিযুক্ত শেখ শাহাবুদ্দিন ওরফে দানি এখনো পুলিশের নাগালের বাইরেই রয়েছে। তা নিয়ে পুলিশকে এখন বিরেধীদের নানা কটাক্ষ হজম করতে হচ্ছে।।