এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ জুলাই : সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির সম্পাদক, বিজেপি নেতা ও কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষকে ফের নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ । কলকাতা মুচিপাড়া থানা থেকে পাঠানো “জননিরাপত্তা এবং ভিড় ব্যবস্থাপনার বাধ্যতামূলক সম্মতি” সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর ওই নোটিশে দুর্গোৎসব ২০২৫-এর জন্য “প্রোটোকল” মেনে চলার জন্য তিন পাতার ফিরিস্তি দিয়েছে পুলিশ । সেই নোটিশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে বিস্তর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সজল ঘোষ । তিনি পুজো বন্ধের ষড়যন্ত্রকারীদের “বধ” করার জন্য দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনাও করেছেন।
সজল ঘোষ লিখেছেন,’গত রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ স্থানীয় মুচিপাড়া পুলিশের কাছ থেকে এই চিঠিটা পেলাম, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, যদি বলি যে এই বাংলায় সরকার দূর্গা পূজা করতে দেয় না তাহলে কি অন্যায় বালা হবে ? আমি প্রশাসনের কাছে জানতে চাই আইন সবার জন্য না শুধু আমাদের জন্য ? যে ধরনের শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তাতে করে পুজো করা সম্ভব নয়, তাই আমি Santosh Mitra Square Sarbojanin Durgotsab Samity র যারা দর্শক / যারা আমাদের পুজোর ভক্ত তাদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি,পুজো হলে স্বমহিমায় হবে হবে, নয়তো পুজো আমরা এ বছর বন্ধ রাখতে বাধ্য হবো ।’ সব শেষে তিনি লিখেছেন,’মা দুর্গার কাছে আমাদের প্রার্থনা মা যারা তোমার পুজো বার বার বন্ধ করে দিতে চায়। তাদেরকেও তুমি বধ করো মা ।’
কলকাতার মুচিপাড়া থানা থেকে পাঠানো ওই নোটিশে বলা হয়েছে,এই অফিসের ১৪.০৫.২০২৫ এবং ১৭.০৬.২০২৫ তারিখের পূর্ববর্তী যোগাযোগের প্রেক্ষিতে এবং এই বছরের প্যান্ডেল নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার প্রতিনিধির সাথে যৌথ পরিদর্শন এবং আলোচনার পর, আসন্ন সন্তোষ মিত্র স্কয়ার সার্বজনীন দুর্গোৎসব ২০২৫-এর জন্য জননিরাপত্তা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। দেখা গেছে যে, বারবার পরামর্শ দেওয়া সত্ত্বেও, গত বছরের অনুষ্ঠানে ভক্তদের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে, যেখানে নির্ধারিত সুরক্ষা প্রোটোকলের অপর্যাপ্ত সম্মতির ফলে তীব্র ভিড় এবং প্রায় পদদলিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যার ফলে অসংখ্য জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছিল।’
আরও লেখা হয়েছে,’ফলস্বরূপ, মুচিপাড়া থানায় ১৫.১০.২০২৪ তারিখের মামলা নং ১৪২ অনুসারে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ২২১/২২৩/৩২৪(৬)/৬১(২) এর অধীনে গুরুতর অবহেলার জন্য আয়োজকদের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপরোক্ত বিষয়গুলি বিবেচনা করে এবং জননিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং দক্ষ ভিড় ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক স্বার্থে, আপনাকে এতদ্বারা নিম্নলিখিত নির্দেশাবলী কঠোরভাবে পালন করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ।’ এরপর দু’পাতার ‘নির্দেশাবলী’ বর্ণনা করা হয়েছে ।
এর আগে গত জুন মাসে মুচিপাড়া থানা থেকে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির সম্পাদক সজল ঘোষের কাছে দু’পাতার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল । তখন তিনি প্রতিক্রিয়ায় লিখেছিলেন, ’সন্ধ্যেবেলা দুর্গাপুজোর থিম ঘোষণার সাথে সাথে সন্ধ্যেবেলায় প্রেমপত্র চলে এলো কলকাতা পুলিশের মুচিপাড়া থানা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে’ । পাশাপাশি তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন,’আমি জানতে চাই আর কটা পুজো কমিটিকে সারা পশ্চিমবঙ্গে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে ? নিশ্চিত, কাউকে নয় l আমার প্রশ্ন তাহলে তারা কি সবাই আইনের উর্ধ্বে ? নাকি আমাদের জন্য আলাদা আইন? বোঝাই যাচ্ছে, ডাক্তারদের দেওয়া শিরদাঁড়াটা খুব একটা ভালো কোয়ালিটির ছিল না। এই সব অন্যায়ের বিচার খুব শীঘ্রই হবে।’।

