হে মহর্ষি!
কোন নক্ষত্রলোকে
তুমি বিরাজিছ আজি।
শত বর্ষ আগে
এসেছিলে জন্ম নিয়ে
এ গ্রহের মাঝে।
বেসেছিলে ভালো
কতনা সোহাগ করে
এই ধরিত্রীরে।
পশু-পক্ষী-লতা-গুল্মে
বসি গঙ্গা তীরে।
জ্বেলেছিলে আলো
সাহিত্যের প্রতিশাখে
অকৃপণ প্রেমরস ঢালি
তুচ্ছ করি রাজপাট
সব এলে ফেলি।
ভরিতে কাব্যিক রসে
কবিতার ডালি।
যবে শঙ্খ ধ্বনি
উঠিল নিনাদি
বাঙালির প্রতি ঘরে
অন্তর আত্মা ভেদি
তব কাব্য রস সুধা
প্রবেশিল আসি কর্ণ পরে
বিশ্বের দ্বারে দ্বারে
নোবেল গৌরবে
সেদিন তোমার সাহিত্য
রথ ধ্বজা উঁচু করে
ভারতবাসির মাথায়
পড়াল রাজার মুকুট
আপন বৈভবে।
সেদিন আমি জন্মি নাই।
বড় হয়ে চিনলাম যবে
ডালি ডালি ফুল রেণু
কুড়াইয়া ফিরি নিত্য
আনন্দে আহ্লাদে
তোমাকে সাজাব বলে।
তুমি যে রাঙায়ে
গেছো সব বাঙালিরে
প্রেম রসে আলু থালু
রাঙ্গামাটি দিয়ে।
দেখি নাই কোনদিন
পড়ে নাই মনে
জাতিস্মর নই বলে জানি নাই
কভু কি একলা আমি
ফুটেছিনু আনমনে
নামহীন ফুল হয়ে
তোমার কাননে
নাকি আঙ্গনের তৃণ হয়ে
তোমার চরণ ধুলি
নিয়েছি হৃদয় জুড়ে
তব নিকেতনে।
পড়ে নাই মনে
তবু যেন মনে হয়
তুমি একান্ত আপন জন
জন্ম জন্ম ধরে
বাধা বিঘ্ন দুঃখ ব্যথা
সব দুরে ফেলে।
করে ছিলে কত খেলা
প্রেম নিয়ে দিয়ে।
প্রকৃতির কোলে বসি
সুদূর প্রান্তরে।
অমোঘ সৃষ্টির মাঝে
বেজেছিল তোমার সঙ্গীত
সুমধুর তানে
আজ ও শুনি সেই গান
বীণা হাতে ইন্দ্র লোক হতে
যেন অপ্সরা অপ্সরী কত
নিত্য আসি সেবা মন্ত্রে
দীক্ষা নিয়ে সতত বাজাতে
তোমার সঙ্গীত
গীতের সম্ভারে
মিলন বিরহ রসে–
যত দিন চলে যায়
ঢলে যায় পুরান রীতি নীতি
প্রজন্মের বিস্তারিত
পরিধি বিস্তৃতি
তোমার সঙ্গীত যেন
মন্ত্র পাঠ হয়ে আজও
অহরহ রাত দিন
বাজিছে সবার কানে
হৃদয় বিদারী
চীর নতুনের স্বাদে
পুরাতন সব ফেলে দিয়ে
সাহিত্যের রঙ আজো
প্রজ্বলিত হয়ে জ্বলে
যেন কোন এক বিভাবরী
অগণিত কাল ধরি
পূর্ণিমার উজ্জ্বলতা
ঢক ঢক করে
করিতেছে পান
পূর্ণ প্রকাশে।
সতত চিরন্তনী তোমার সব বাণী।
আজো বুকে বীণা হয়ে বাজে।
কবি তোমাকে লেখা কি যায়
পেন কালি দিয়ে।
কোন্ ফুল দিয়ে বলো
পূজিব তোমাকে।
তুমি যে গুরুর গুরু
সাহিত্য জগতে
ক্ষমা প্রার্থী গুরুবর
ধৃষ্টতার তরে
ভূমিষ্ঠ প্রণাম করি
তোমার সন্মুখে
পুষ্ট করো আর্শীবাদে
শুভ পঁচিশে বৈশাখে।।

