একই দিনে জন্ম নিলো দুটি সন্তান
একটি অতি ভদ্র, একটি মস্তান।
একটা জন্ম নিলো চাষার ঘরে
অপরটির ভয়ে জমিদার মরে।
তারপর কেটে গেলো বছর সাত
জমিদার কন্যার আজ ভেঙেছে হাত।
হাকিম, বদ্যি সব ডাকো তাড়াতাড়ি
নইলে যে এই মেয়ে করবে বাড়াবাড়ি।
চাষার মেয়ে হয়েছে নাকি সুন্দরী খুব
পাঠশালা যাবে, ঘাটে দিয়ে এলো ডুব।
বাড়ির কাজ কর্মেও এই মেয়ে গুনী
সকলের মুখে শুধু প্রশংসাই শুনি।
জমিদার কন্যা অহংকারী, নেই ধরন
সকল কে তুচ্ছ ভাবে, মাটিতে পড়েনা চরণ।
গ্রামের সবাই জানে কে বেশি ভালো
কার মন পরিস্কার, কার মন কালো।
এদিকে জমিদার বাড়িতে বেজায় ভিড়
যার ভুলে ভেঙেছে হাত, চাই তার শির।
লেঠেলরা খুঁজতে ব্যস্ত কে সেই দোষী
জমিদার বলে চল মা পূজা দিয়ে আসি।
দিন শেষে রাত হলো, লেঠেলিরা চিন্তিত
পাইনি খুঁজে দোষী কে, তাই ভয়ে কম্পিত।
জমিদারের সম্মুখে মাথা নত করে
বললো হুজুর দোষী হয়তো আছেই ঘরে।
এই কথা শুনে জমিদার কন্যা এলো তেড়ে
লেঠেলের হাত থেকে লাঠি নিলো কেঁড়ে।
উচ্চস্বরে বললো সব কুঁড়ের দল
কোথা কোথা খুঁজেছিস সত্যি করে বল!
জমিদার গিন্নি বিপদের গন্ধ পেয়ে
মেয়ের মুখ পানে আচমকা চেয়ে,
বললো মা ঘরে চল এসব থাক্
তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে ঠাকুর কে ডাক্।
কোনো ভাবে সেদিন কেটে গেলো রাত
পরের দিন খোঁজ শুরু কে ভেঙেছে হাত।
জমিদার বাড়ি চলছে তাই জিজ্ঞাসাবাদ
কিন্তু মেয়ে আজ চুপ, নেই প্রতিবাদ।
এমন সময় চাষার মেয়ে এলো এই বাড়ি
জমিদার কন্যার মুখ রাগে হলো হাড়ি।
চাষার মেয়ে বলে ঘটনাটা কি জানো?
নিজের দোষে ভেঙেছে হাত সেটা কি মানো?
এই কথা শুনে স্তম্ভিত উপস্থিত সকলে,
একে অপরকে বলে কি হয়েছিল আসলে?
জমিদার বলে মা এক কড়ি নাও
কি ঘটেছিল তার পুরো বর্ননা দাও।
চাষার মেয়ে সরল, আগে পিছে না ভেবে
জন সম্মুখে বুঝি সব সত্য বলে দেবে!
এই ভেবে জমিদার কন্যা করলো ছল
মিথ্যে ব্যথার নাটকে চোখে আনলো জল।
জমিদার গিন্নি তাড়াতাড়ি গেলো ছুটে
কাঁদিস্ নে মা, কি হয়েছে বল মুখ ফুটে?
মেয়ে আরও জোরে চিৎকার জুড়ে দিল
হাত ভাঙার কারণ, রহস্য হয়েই ছিল।।