অঝোর ধারায় ঝরলে বৃষ্টি আজও তোমায় খুঁজি
ভাবো, আয়ুরেখা’র মনের আয়ু ফুরিয়ে গেছে বুঝি?
একচালা ঘর, সামনে উঠোন, সব্জি দু এক সারি
শ্রাবণ এলেই সবুজের দেশ লাগতো কি আহামরি।
ঝমঝিময়ে জলের ধারা গড়িয়ে যখন পড়তো,
এক মুর্তিমানের কীর্তিকলাপ হাওয়ার বেগে ছুটতো।
মানকচুর ওই মহান পাতা ছাউনি দিয়ে মাথায়,
কিশোরমতি বালক সে এক ঘুরতো পাড়ায় পাড়ায়।
ডাক ছাড়তো চপল গলায়, ওই বেয়ে যায় ‘কৈ’
ও জেম্মা, দিম্মা, কান্ড দেখ, সবাই গেলে কই ?
পায়ের নিচে জুতোর মতো নারকেলের দুই খোল
কথায় শব্দে পাড়া মাতানোয় লাগতো না ঢাক ঢোল!
বাবা জ্যাঠা পড়শি স্বজন- সব ভগবানকেই দুষত
বাপ-মা ছাড়া হাল কি যে হয়, অন্তর্যামী যদি জানত!
আমরা যখন ডুব দিয়েছি আলুর চপ, মুড়ি মাখায়
মা ডাকতো, ওরে.. ভিজিস না আর, একটু খানি আয়।
দুষ্টুমতি ছেলের মাথায় আদর কি আর ঢোকে
মন যে পড়ে খালের পাড়ে, দেখতাম অলক্ষ্যে।
বায়না আমারও কম ছিল না, যখন তখন ডাক
কুল, কদম আর কয়েৎ বেল, ভাঙতাম মৌচাক।
সব চুরির দায় মাথায় নিয়ে রাখতে খুশি আমায়
হাসতে হাসতে অসাধ্য সাধন করতে অবলীলায়।
মামার বাড়ি ভারী মজা? সেই যে গেলে চলে
ফিরবে কবে, আয়ু’র গাঁয়ে কিচ্ছু যাওনি বলে।
মাঝখানে ঠিক কতটা সময় হিসেব রাখা হয় নি
জীবন যুদ্ধের দৌড়ে বুঝি ভাবার ফুরসৎ পাওনি?
সেই শ্যামলা মেয়ে আজও খোঁজে শ্রাবণ কিংবা শোকে,
আসবে বুঝি অতর্কিতে আর জাপটে ধরবে বুকে।
বলবে এসে, দরাজ হেসে, এই একটু খানি তো গেছি
এমন ভাবে ভয় পেতে হয়! সত্যি না মিছিমিছি?
একলা ঘরের শূন্য দেওয়াল, খাঁ খাঁ মনের ঘর
বলতে পারো, আর কত কাল? হারিয়ে ফেলছি জোর।
সবটুকু খেদ মিটিয়ে দিতে আর কি হবে দেখা?
সাজিয়ে প্রহর অপেক্ষাতে, তোমার ‘আয়ুরেখা’…..