বৃষ্টি মাথায় টোটোয় বসে আছি
রাস্তাঘাট বলতে প্রায় ফাঁকা
লক্ষ্মীর ঝাঁপি হয়নি তেমন ভর্তি
সারাটা দিনে কয়েকবার গড়িয়েছে চাকা।
ভাড়ার টাকায় ভাগ্যের চাকা ঘোরে
পথিকের দিকে তাকিয়ে হেঁকে বলি
যাবেন কোথায়? স্টেশন নাকি বাসস্ট্যান্ড ?
দশ টাকার বিনিময়ে অনেকটা পথ চলি।
মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি ঝিরিঝিরি
একটি ছাতায় দু’টি ছেলেমেয়ে
হাত নেড়ে বোঝালো গাড়ি থামাও
সিটে বসে বললো, সুনীল সরণি, বাঁয়ে..
এদিকে মেঘ আরও ঘনকালো
বৃষ্টির তোড়ে ভিজে যাচ্ছে ওরা
দেখেই, পিছনের ঢাকনা ফেলে দিয়ে
আয়নায় দেখি, কপোত-কপোতী জোড়া..
ছেলেটি হঠাৎ রুমাল বের করে
মেয়েটির মুখ মুছিয়ে দিয়ে বলে,
রেনকোটটা আনিস নি কেন, বর্ষা ?
বৃষ্টি মাখিস নিছক মজার ছলে?
মেয়েটি হেসে খিলখিলিয়ে বলে,
আজকে জানিস বেজায় খুশি মন
চল, টোটো থেকে নেমে যাই দু’জনে
আকাশের বুকে বর্ষা ভিজুক অনেকক্ষণ..
আমি সব শুনেও না শোনার ভান করে
হর্ণ বাজিয়ে ওদের দৃষ্টি ফেরায়
হঠাৎ ছেলেটি বললো, এবার থামো
থামো, কি করে পোষায় এতো কম ভাড়ায়?
আমি বললাম, যা ভাড়া পাই তা দিয়েই জানেন,
বুড়ো বাপমায়ের পেটটা ভরাতে পারি
প্যাসেঞ্জারের অপেক্ষায় ওই বৃদ্ধকে দেখুন
রিকশাটানা চোখ হতাশ, মন ভারী ….
টোটোর চাকাটা আবার সামনে গড়ায়
কি আছে আজ ভাগ্যে কে জানে !
বৃষ্টি কারো কাছে প্রেমের উন্মাদনা
কারো কাছে কাক ভেজা জীবনের মানে…