হে পৃথিবী, আমায় চিনতে পারছো?
আমি তোমারই বুকে জন্মানো এক অনাদৃত প্রাণ
আমি অবহেলিত, উপেক্ষিত, সুরহীন এক গান।
হে, বাল্যসখীগণ, চিনতে পারো আমায়?
তোমরা যখন উজ্জ্বল মুখে আনন্দের নির্যাস,
আমি তখন বোবা উদ্ভিদ, অভিমানী ক্যাকটাস।
কেটেছে সুখে আল্লাদে তব সজল শৈশব, আমার জীবন কন্টকময়, ছিল হাহাকার রব।
যৌবনে তব লতানো কায়া করেছে প্রেম রচনা
তারই পাশাপাশি,
আমি উদাসী রচেছি শুধু বেদনা।
বিধাতা কেন যে করেছে আমার এমন অধম সৃষ্টি!
আমার আকাশে রামধনু নেই, রয়েছে শুধুই বৃষ্টি।
হঠাৎ একদিন…
হঠাৎ একদিন বাতাসে সৌরভ, আকাশে রং-এর ছটা
কে যেন চরণ শিকলে বেঁধেছে,
প্রেম জোয়ারের ঘটা।
চেয়ে দেখি, সে এক আনন্দপুরুষ
হাসিভরা মুখে ভেসে
বসন্তসুখ বিলিয়ে দিয়েছে,
আমারি অঙ্গনে এসে।
বেজেছে বাঁশি, শিকলের ফাঁসি, সযতনে আবালাই-
হোক দেরী, তবু এল বসন্ত,
ফাগ মাখি- মাখাই।
কতনা আমি জেগেছি রজনী, কত দিন গেছে দুখে,
আজ বসন্ত জীবনের রং রাঙিয়েছে মলিন মুখে।।