এইদিন ওয়েবডেস্ক,২৬ জুন : আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন ও মানবাধিকার সংগঠন দাবি করেছিল ২০ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলিমদের অবৈধ সংশোধনাগারে বন্দি করে রেখেছে চীন । চীন ওই সমস্ত সংশোধনাগারগুলির নাম দিয়েছে ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ । যেখানে নাকি মানুষদের ধার্মিক কট্টরপন্থী মানসিকতা থেকে মুক্ত করার কাজ হয় । বন্দি মানুষদের ক্রিমিনাল রেকর্ড,ধর্ম প্রভৃতি সম্পর্কীয় তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয় না ।
উইঘুর মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ঝুটঝামেলার ঘটনা এমনকি মিথ্যা অভিযোগের মামলাতেও ৫ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ডের সাজা দেওয়া হচ্ছে । সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালের পর থেকে চীনের উইঘুর অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতে আতঙ্ক ছড়ানো,বিচ্ছিন্নতাবাদ ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে রজু হওয়া মামলার ঘটনা দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে ।
তার সঙ্গে দ্রুত হারে বাড়ছে তথাকথিত ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের’ সংখ্যা । চীনের জিংজিয়াং প্রদেশের স্যাটেলাইট চিত্র থেকে তার প্রমান মিলছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এএএসপিআইয়ের আন্তর্জাতিক সাইবার পলিসির অস্ট্রেলিয়ান গবেষক নাথন রুসের । এছাড়া বন্দি উইঘুরদের আত্মীয়দের এনিয়ে বয়ানও ওই ঘটনার সত্যতা প্রমান করে ।
২০১৪ সালে জিংজিয়াং প্রদেশে ২১ হাজার উইঘুরকে কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল । ২০১৮ সালে সেই সংখ্যাটা এক লাফে পৌঁছে গিয়েছিল ১ লাখ ৩৩ হাজারে । বিশেষজ্ঞরা জানান, ওই এলাকার জনসংখ্যা আড়াই কোটির আশপাশ । যেখানে বিগত ৫ বছরে প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে জেলে পাঠানো হয়েছে । তার মধ্যে ৮৭ শতাংশ মানুষকে ৫ বছরের অধিক কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে । যা ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানের থেকে ৮৭ শতাংশের অধিক । যদিও ২০১৮ সালের পর থেকে জেলবন্দিদের পরিসংখ্যান প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছে চীন ।
২০১৬-১৮ সালের মধ্যে জেলে পাঠানো ৬০ জন বন্দির মামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে চীনের বর্ষীয়ান মানবধিকার গবেষক মায়া ওয়াং বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বা মারপিট করার জন্যও ৫ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হচ্ছে ।’তিনি জানান,উইঘুর অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে কোনও উকিল দিতে দেওয়া হচ্ছে না । এমনকি কোনও প্রমানও প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না । অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে দোষীদের সাজা ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে ।
মানবধিকার সংগঠন সুত্রে জানা গেছে, উইঘুরদের নিয়ে এযাবৎ যত মামলা আদালতে উঠেছে তার প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের দোষী সব্যস্ত করা হয়েছে । ২০২০ সালে ১৫ লাখ মামলায় মাত্র ৬৫৬ জন মানুষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছিল । আর সিংহভাগ মানুষকে পাঠানো হয়েছে জেলে।।