দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৪ আগস্ট : জন্ম থেকেই দুটো মাথা । দুটো মুখ দিয়েই মায়ের স্তন পান করছে একটি বাছুর । পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার মূলগ্রামে এমনই এক অদ্ভুতদর্শন বাছুরের ঘিরে কৌতুহলী এলাকার মানুষ । বাছুরটি দেখার জন্য আশপাশের গ্রাম থেকে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন মূলগ্রামের মাঠপাড়ার বাসিন্দা গোপালক সোমনাথ মাজির বাড়িতে । গত মঙ্গলবার ওই বাছুরটি জন্মানোর পর থেকে মোটামুটি সুস্থই রয়েছে বলে জানিয়েছেন সোমনাথ বাবু ।
স্ত্রী মাধু মাঝি দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার পেশায় জনমজুর সোমনাথ মাজির । সংসারের সাশ্রয়ের জন্য বাড়িতে গরু প্রতিপালন করেন তিনি । বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে যেটুকু দুধ উদ্বৃত্ত হয় তা তিনি বিক্রি করেন । সোমনাথ জানান,তার বাড়ির গরুটি আনার পর তিনটি বাছুরের জন্ম দিয়েছিল । মঙ্গলবার চতুর্থ বাছুরের জন্ম দেয় । কিন্তু প্রসবের সময় সমস্যা হওয়ায় দুজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে ডেকে আনা হয় । তারা গরুটিকে প্রসব করানোর পর দেখা যায় বাছুরের দুটি মাথা ।
এদিকে ওই বাছুরটির ছবি কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিলে এলাকায় আলোড়ন পড়ে যায় । তারপর থেকেই বাছুরটি দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছে সোমনাথ ও মাধুদেবীদের বাড়িতে ।
কিন্তু এই প্রকার অদ্ভুতদর্শন বাছুরের জন্মের কারন কি ? এর উত্তরে প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগের কাটোয়া-২ ব্লক আধিকারিক ডা: জয়কিঙ্কর মান্না বলেন,’এই ধরনের ঘটনাকে পলিসেফালি বলা হয় । এটি এক ধরনের জেনেটিক ডিসঅর্ডার । গর্ভধারনের প্রাথমিক পর্যায়ে জাইগোটের অসম্পূর্ণ বিভাজন হয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটে । এই ধরনের পলিসেফালি নিয়ে জন্ম নেওয়া প্রাণীরর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম, প্রায় ৩৮ শতাংশ ।’
তবে মূলগ্রামের ওই দু’মাথার বাছুরটি জন্মের প্রথম দুদিন মোটামুটি সুস্থ থাকলেও আজ থেকে কিছুটা অসুস্থ বলে জানিয়েছেন মাধু মাঝি । তিনি বলেন, ‘জন্মের প্রথম দু’দিন নিজেই দুধ পান করছিল বাছুরটি । কিন্তু আজ থেকে বাছুরটি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে,যেকারণে মাঝেমধ্যে দুধ খাইয়ে দিতে হচ্ছে । গাভীটিকেও স্যলাইন দিতে হচ্ছে । জানিনা কি হবে শেষ পর্যন্ত ।’।