এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১১ আগস্ট : কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের শিকার তরুনী চিকিৎসকের দেহ পুলিশ তড়িঘড়ি দাহ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে । যেকারণে এই আরজি কর ধর্ষণ-খুনের মামলা নিয়ে কলকাতা পুলিশের ভূমিকায় সন্দেহ প্রকাশ করছে অনেকে । আরজি কর কান্ডের মাঝে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার হাসপাতালের এক মহিলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের হুমকির অভিযোগে এক সিভিক ভলান্টিয়ার গ্রেফতার হয়েছে । এবারে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ফিমেল সার্জিকাল ওয়ার্ডে এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর প্রতি অশালীন আচরণ এবং কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল একজন প্রৌঢ় রোগীর জামাইয়ের বিরুদ্ধে । আজ রবিবার ওই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন । তার ভিত্তিতে ইনতাজুল হক(৩৫) নামে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ধৃতের বাড়ি কাটোয়া থানার মুলটি গ্রামে । ধৃতকে সোমবার আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে । এদিকে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে বারবার একই ঘটনা ঘটে থাকায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
জানা গেছে,ইনতাজুল হকের শ্বশুর ওমর আলি হার্নিয়ার অস্ত্রপচারের জন্য শনিবার কাটোয়া হাসপাতালে সার্জিকাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় । শ্বশুরের দেখভাল করতে রাতে হাসপাতালে ছিলেন ইনতাজুল হক। অন্যদিকে অভিযোগকারিনীর স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি কাটোয়ার ডুবোপাড়া এলাকায়। তিনি কেতুগ্রাম ব্লকের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্সিং কর্মী হিসাবে কর্মরত রয়েছেন । হাসপাতালের ফিমেল সার্জিকাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে বছর পঁয়ত্রিশের ওই স্বাস্থ্যকর্মীর ৭ বছরের মেয়ে । বাড়িতে খেলা করতে গিয়ে আহত হয় শিশুটি । শনিবার ভর্তি করার পর রাতে তিনি মেয়ের কাছেই ছিলেন ।
অভিযোগ, রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ ওই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে নিজের গোপনাঙ্গ দেখিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে ইনতাজুল হক । এমনকি সে কুপ্রস্তাবও দিতে থাকে বলে অভিযোগ । মহিলা ভয় পেয়ে হাসপাতালের নার্সদের ডাকাডাকি করেন । এরপর সেখানে আসে হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরা । এরপর পুলিশ ইনতাজুল হককে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় ।
জানা গেছে,কাটোয়া হাসপাতালে পুরানো ভবনে যে ঘরে পুরুষ ওয়ার্ড ছিল সেই ওয়ার্ড নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে । পরিবর্তে মহিলা সার্জিকাল বিভাগে এই ঘরে প্লাইউডের আড়াল দিয়ে পৃথক পৃথকভাবে শিশু, মহিলা এবং পুরুষ সার্জিকাল ওয়ার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে । পুরুষ সার্জিকাল ওয়ার্ড যেতে হলে মহিলা ও শিশু সার্জিকাল ওয়ার্ড টপকে যেতে হয়। কিন্তু দুটি পৃথক ওয়ার্ডের মধ্যে কোনও পর্দা পর্যন্ত দেওয়া নেই । যেকারণে মহিলা সার্জিকাল বিভাগের রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা রাতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন ।
কেতুগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই নার্সিংকর্মী বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন,’কাটোয়া হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডের যা পরিকাঠামো দেখলাম তাতে মহিলা রোগী ও রোগীর আত্মীয়াদের জন্য চিন্তার বিষয় । পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড এভাবে একসাথে থাকলে ভবিষ্যতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি ।’ যদিও এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি । তবে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি তুলেছেন যে অবিলম্বে হাসপাতালের সার্জিকাল বিভাগ থেকে পুরুষ ওয়ার্ডকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হোক ।।