এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুম্বাই,০৫ জুলাই : করোনা মহামারীর মধ্যেই ব্লাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল । যদিও সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি ব্লাক ফাঙ্গাস । এদিকে তার জের কাটতে না কাটতেই নতুন এক উপসর্গকে ঘিরে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে দেশের চিকিৎসক মহলকে । করোনামুক্ত রোগীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস ( avascular necrosis) বা বোন ডেথের লক্ষ্মণ । অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসে আক্রান্ত রোগীর শরীরের হাড় গলতে শুরু করে । আর মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে এই লক্ষণের তিন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে । আগামী দিনে অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্লাক ফাঙ্গাস ও অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসের মুখ্য কারন হিসাবে স্টেরয়েডকেই দায়ি করা হয়েছে । করোনা আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তুলতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়ে থাকে । আর ওই সমস্ত রোগীদের মধ্যেই পরবর্তী কালে অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানা গেছে ।
ইংরাজী সংবাদপত্র টাইমস ওফ ইন্ডিয়ার এই সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে,মুম্বাইয়ের মাহিমে হিন্দুজা হাসপাতালে অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসে আক্রান্ত ৩ রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছিল । যাদের প্রত্যেকের বয়স ৪০ বছরের নিচে । করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন । কিন্তু পরবর্তী কালে তাঁরা অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসে আক্রান্ত হন । হিন্দুজা হাসপাতালের গবেষক চিকিৎসক ডঃ সঞ্জয় আগরওয়াল বলেন, ‘আক্রান্তদের ফিমার বোন অর্থাৎ জানুর হাড়ে ব্যাথা অনুভব হচ্ছিল । তিন রোগীই পেশায় চিকিৎসক । তাই তাঁরা সহজেই রোগের লক্ষ্মণ বুঝতে পেরেছিলেন । আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন ।’
এই রোগের উপর মেডিকেল জার্নাল বিএমজে’তে ”অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস এ পার্ট অফ ল্যান্স কোভিড-১৯’ শীর্ষক একটি গবেষনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল । তাতে বলা হয়েছে,করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য জীবন রক্ষক corticosteroids এর ব্যাপক রুপে ব্যবহারের কারনে অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসের ঘটনা বৃদ্ধি পাবে । প্রতিবেদন অনুসারে, অনান্য অর্থোপোডিক বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন কোভিডের পরে রোগীদের মধ্যে এই রকম দু’একটা মামলা তাঁদের নজরেও পড়েছে ।
সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কোভিড-১৯-এ ভোগা রোগীদের মধ্যে যাদের স্টেরয়েডের প্রয়োজন পড়ে পরবর্তী সময়ে তাঁদের এই লক্ষ্মণও দেখা যাচ্ছে । এটা খুবই চিন্তাজনক । রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য ডঃ রাহুল পন্ডিত জানিয়েছেন,অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিসের উপর তাঁদের নজর রয়েছে ।।