দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৫ জুলাই : দিন দুয়েক আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী-২ ব্লকে ১৫ টি ব্যালট পেপার উদ্ধার ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল জেলা । পূর্বস্থলীর কারিকরপাড়ার ১৬৫ নম্বর বুথের ওই ব্যালট পেপারগুলিতে সিপিএম প্রার্থী মারিয়া বিবি শেখের পক্ষে ছাপ দেওয়া দেখা গিয়েছিল । এবারের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল প্রার্থী সমর চ্যাটার্জির কাছে মাত্র ৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন মারিয়া বিবি । সিপিএমের অভিযোগ, স্থানীয় নীলমনি ব্রহ্মচারী ইন্সটিউশনে গননার সময় ওই ব্যালট পেপারগুলি সরিয়ে দিয়েছিল শাসকদলের কর্মীরা । সেই ঘটনার জের মিটতে না মিটতেই এবার ভাতার ব্লকের সাহেবগঞ্জ-২ পঞ্চায়েতের আয়মাপাড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে ঝোপজঙ্গলের মধ্যে বেশ কিছু ব্যালট পেপার পড়ে থাকার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে । সিপিএমের দাবি ওই সমস্ত ব্যালটে তাদের প্রার্থীর পক্ষেই ছাপ দেওয়া হয়েছে । এনিয়ে তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যালট কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন । এনিয়ে সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে চাপানউতোর । তৃণমুলের দাবি,সিপিএমই কারসাজি করে ওই ব্যালটগুলি ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে ।
জানা গেছে,এদিন সকালে কয়েকজন কৃষক মাঠে চাষের কাজে যাওয়ার সময় আয়মাপাড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে ঝোপের মধ্যে ব্যালট পেপারগুলি পড়ে থাকতে দেখে । তবে শুধু গ্রাম পঞ্চায়েতই নয়,পড়ে থাকা ব্যালটগুলির মধ্যে বেশ কিছু ছিল পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ আসনেরও । ব্যালটগুলি ছিল সাহেবগঞ্জ-২ পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর সংসদের ১৬৭ নম্বর বুথের । ওই বুথের সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন হাসনাবিবি শেখ । ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জোৎস্না বেগমের কাছে ২০৫ ভোটে পরাজিত হয়েছেন । এদিন ব্যালটগুলি উদ্ধার হওয়ার পর সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য বামাচরণ ব্যানার্জি অভিযোগ করেন,’আয়মাপাড়া গ্রামের বুথে আমাদের কাউন্টিং এজেন্টকে ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পর মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছিল। আর তখনই সিপিএমের প্রার্থীর পক্ষে ছাপ দেওয়া ওই ব্যালটগুলি তৃণমূলের লোকজন ব্যালট বাক্স থেকে বের করে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে এসেছে ।’ এনিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বামাচরণবাবু । অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাতার ব্লক সভাপতি বাসুদেব যশ দাবি করেছেন,ঝোপের মধ্যে ব্যালট ফেলে দেওয়ার পিছনে সিপিএমেরই কারসাজি আছে । বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি ।
জানা গেছে,আয়মাপাড়া গ্রামের ১৬৭ নম্বর বুথের মোট ভোটার ৮৪৯ জন । তার মধ্যে ভোট পড়েছিল ৫২০ টি । ৩৫ টি ভোট বাতিল হয় । গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থীর পক্ষে ৩৪৫ টি ভোট পড়ে । সিপিএমের প্রার্থী ভোট পেয়েছিলেন ১৪০ টি ভোট । তবে এদিন উদ্ধার হওয়া ব্যালটগুলির মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতি বা জেল পরিষদে কোন দলের পক্ষে ছাপ দেওয়া আছে তা জানা যায়নি ।।