এইদিন ওয়েবডেস্ক,১৬ আগস্ট : টানা ৩১৪ দিন ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এযাবৎ ৪০ হাজার ৫ জন নিহত এবং ৯২ হাজার ৪০১ জন আহত হয়েছে। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ। যারা এখনো বেঁচে আছেন, তারাও দিন পার করছেন চরম মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে।দীর্ঘ সাড়ে দশ মাসের এই যুদ্ধে পুরো গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অপ্রতুল চিকিৎসা সেবার কারণে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজার শিশু বিশেষজ্ঞ লুবনা আল আজাইজা বলেছেন,পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে বেঁচে থাকার মতো ন্যূনতম পরিবেশও নেই। ছোট্ট শিশুরা যখন চুল আঁচড়ানোর জন্য আমার কাছে আসে, তখন তেল বা চিরুনি দিতে না পেরে আমি লজ্জিত হই। অনেক সময় বাধ্য হয়ে তাদের চুল কেটে ফেলতে বলি।
শুধু তেল বা চিরুনি নয়, সাবান, শ্যাম্পু, মাসিকের জিনিসপত্র, এমনকি গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্রও এখন দুর্লভ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ায় ছোঁয়াচে রোগ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ছে।
ডাঃ লুবনা জানান, শরণার্থী শিবিরগুলোতে অস্বাস্যকর পরিবেশে থাকার কারণে অনেক শিশুর চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু ওষুধের ঘাটতিতে তাদের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। একটি সাধারণ বার্ন মলমের দাম এখন ৫০ ডলারেরও বেশি।
ডাঃ লুবনা আগে বেইট লাহিয়ার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর গাজাকে বিভক্ত করার কারণে তিনি সেই হাসপাতালে যেতে পারছেন না। অনেক চিকিৎসকের মতো তিনিও এখন তার বাড়িতে আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
গত মে মাসে ইসরায়েল রাফাহ সীমান্ত দখল করার পর থেকে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রায় বন্ধ রয়েছে। ফলে গাজায় মানবিক সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। তাই সীমান্ত খুলে ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাঃ লুবনা ।।