এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৭ মে : পাকিস্তান মদতপুষ্ট ইসলামি সন্ত্রাসবাদকে নিশ্চিহ্ন করতে “অপারেশন সিঁন্দুর” শুরু করেছে ভারত । মঙ্গলবার গভীর রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) পাঁচটি এবং পঞ্জাব প্রদেশে চারটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। ভারতের তরফে মুরিদকে, কোটলি, বাহওয়ালপুর এবং মুজফ্ফরাবাদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। মুরিদকেতেই রয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার সদর দপ্তর। অন্যদিকে, বাহওয়ালপুরে রয়েছে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি। ভারতের তরফে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কোনও সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়নি। লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন, প্রত্যাঘাতের ক্ষেত্রে সেনা যথেষ্ট সংযম প্রদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ৮০ থেকে ৯০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে প্রত্যাঘাতে।
এদিকে বাহাওয়ালপুরে লস্কর-ই-তৈবার সদর দপ্তরে হামলার ভিডিও ফুটেজ এক্স-এ পোস্ট করে পাকিস্তান বংশভূত ব্রিটিশ নাগরিক ফারাজ পারভেজ বলেছেন, ‘বাহাওয়ালপুরের সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস ভারতের বড় অর্জন’ । তিনি লিখেছেন,’বাহাওয়ালপুর পাকিস্তানের ৫৬০ কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত এবং ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এত নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হওয়া ভারতের জন্য একটি বড় অর্জন।’
কি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করল ভারত ?
অপারেশন সিঁদুর হল ভারতের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রিসিশন স্ট্রাইক ওয়েপন সিস্টেম (PSWS)। এটা ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলিতে আঘাত হেনেছে ভারতীয় সেনা। এর পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে জিপিএস, ইনফ্রারেড, রাডার এবং লেজার টার্গেটিং সিস্টেম। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রিসিশন স্ট্রাইক ওয়েপন সিস্টেম হল প্রযুক্তি ও স্ট্র্যাটেজির মেলবন্ধন। এর মাধ্যমে নিরাপদ দূরত্বে থেকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিঁখুতভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো যায়। এতে অপারেটর, লঞ্চিং প্ল্যাটফর্মের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এড়ানো যায় সেনা-মৃত্যু। সেনা সূত্রের খবর, প্রত্যাঘাতের ক্ষেত্রে স্ক্যাল্প মিসাইল ব্যবহার করা হয়েছে। রাফাল থেকে ছোড়া হয়েছে হ্যামার স্মার্ট বম্ব।
সেনার তরফে আজ বুধবার বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১টা বেজে ৫ মিনিট থেকে দেড়টার মধ্যে অপারেশন সিদুঁর সেরেছে ভারত। নির্ভুলভাবে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। দুই মহিলা সেনাকর্তা উইং কমান্ডার ভূমিকা সিং এবং কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এদিন এয়ারক্র্যাফ্ট থেকে তোলা প্রত্যাঘাতের ছবি প্রকাশ্যে আনেন। লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদিনের ঘাঁটিতে হামলার আগে ও পরের ছবি তুলে ধরেন তাঁরা।
অন্যদিকে, বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, তিন দশক ধরে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। ভারতের তরফে বার বার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদতের অভিযোগ করা হলেও প্রতিবারই তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যাঘাত হানল ভারতীয় সেনা।।