এইদিন ওয়েবডেস্ক,পাকিস্তান,০৮ মে : আজ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের লাহোর,রাওয়ালপিন্ডিসহ একাধিক এলাকার সেনা ঘাঁটিতে আত্মঘাতী ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারতের বায়ূসেনা । তার মধ্যে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে পাকিস্তানের সেনা ঘাঁটিতে একটা হামলা চালানো হয় । আজ ওই স্টেডিয়ামে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)-এর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের খেলা ছিল। কিন্তু সেই খেলা বাতিল হয়ে যায় । ভারতের এই ড্রোন হামলার পর পাকিস্তানের খেলতে যাওয়া বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে । বাংলাদেশেরও কয়েকজন খেলোয়াড় পিএসএল খেলতে গেছে । এখন তারা প্রাণ বাঁচিয়ে দেশে ফিরে আসছে৷ বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন ইতিমধ্যেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিজেদের দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে বলে জানা গেছে ।
কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত-পাকিস্তানে। এর মধ্যেই চলছিল পিএসএলের খেলা। কিন্তু বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের হামলার পর বেজে গেছে যুদ্ধের দামামা। আজ পাকিস্তানের নটি শহরে ১৫ টি ঠিকানায় অন্তত ৫০টি আত্মঘাতী ড্রোন হামলা চালায় ভারত। ফলে পাকিস্তান জুড়ে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে ।
পিএসএল খেলতে গত মাসে দেশ ছেড়ে যাওয়া রিশাদ ও নাহিদ পাকিস্তানের ইসলামাবাদে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার পেশাওয়ার জালমির হয়ে টুর্নামেন্টে অভিষেক হতে পারত নাহিদের। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে এরই মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন রিশাদ।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রিশাদ ও নাহিদসহ পিএসএলে অংশ নেওয়া বিদেশি ক্রিকেটাররা নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন। আজ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নাকভির সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন তারা। পিসিবি ও পিএসএল আয়োজকদের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। বোর্ডের একটি সূত্র নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, দ্রুতই পাকিস্তান ছাড়তে পারেন নাহিদ-রিশাদ হোসেনসহ বেশিরভাগ বিদেশি ক্রিকেটার। তিনি বলেন,গতকাল থেকেই নাহিদ ও রিশাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি আমরা। পিসিবি চেয়ারম্যান, পিএসএল চেয়ারম্যানের সঙ্গেও যোগাযোগ আছে। ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত কথা হচ্ছে।
পরিস্থিতি তো বোঝাই যাচ্ছে যে, ভালো নয়। ক্রিকেটাররা নিরাপদ আছে। তবে কিছুটা শঙ্কা তো আছেই। বিদেশি ক্রিকেটাররা সম্ভবত আর পাকিস্তানে থাকবে না। কীভাবে বা কবে তারা দেশে ফিরতে পারবে সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে।’
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, রিশাদ ও নাহিদের দেশে ফিরে আসা অনেকটাই নিশ্চিত। তবে পাকিস্তানের আকাশসীমা নিয়ে দেশটি কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটি দেখে দুই ক্রিকেটারকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবে বিসিবি। এক বিবৃতিতে বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নাহিদ ও রিশাদের নিরাপদে দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছেন তারা। পিসিবি ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বিসিবি, যাতে পাকিস্তানে থাকাকালে ক্রিকেটাররা নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করে। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে তাদের নিরাপদে ও সময়মতো প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বোর্ড।’
সূচি অনুযায়ী আগামী ১৮ মে পিএসএলের ফাইনাল হওয়ার কথা। এরপর সেখানে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা বাংলাদেশের। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলে আগামী ২১ মে পাকিস্তানে পা রাখার কথা লিটন কুমার দাস, শেখ মেহেদি হাসানদের। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই সফর নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে এই বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করছে না।।

