এইদিন ওয়েবডেস্ক,শ্রীনগর,১৭ সেপ্টেম্বর : জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় সেনাবাহিনীর ন্যাশনাল রাইফেলস ইউনিটের দুইজন মেজর-র্যাঙ্ক অফিসার কর্নেল মনপ্রীত সিং ও মেজর আশিস ধোনচাক এবং জম্মু ও কাশ্মীরের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ হিমানুন মুজামিল ভাট সন্ত্রাসবাদীদের আচমকা গুলিতে শহীদ হন । এই ঘটনার পর সন্ত্রাসবাদীদের নিকেশ অভিযান শুরু হয় । পার্বত্য এলাকা এবং ঘন জঙ্গলের সূযোগ নিয়ে গুহায় লুকিয়ে থাকে পাকিস্থানি সন্ত্রাসীরা । কিন্তু ড্রোনের সাহায্যে তাদের অবস্থান জানতে পারে ভারতীয় সেনা । ভারতীয় সেনা ওই সন্ত্রাসবাদীদের ঘিরে ফেললে তাদের বাঁচাতে ফায়ার সাপোর্ট দিতে শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী । তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোয়াডকপ্টারগুলি লক্ষ্য করে কভার ফায়ার দেয় । কিন্তু এত চেষ্টা করেও ভারতীয় সেনার হাত থেকে সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে সক্ষম হয়নি পাকিস্তান ৷ ভারতের সেনার গুলিতে খতম হয় পাকিস্তানের ৩ সন্ত্রাসবাদী ।
উত্তর কাশ্মীরের উরিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ব্রিগেডিয়ার পিএমএস ধিলন বলেছেন যে পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী দলগুলির অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা সম্পর্কে নির্দিষ্ট ইনপুটের পরে শনিবার ভোরে এলওসি বরাবর উরি সেক্টরের হাতলাঙ্গায় অভিযান শুরু করা হয়েছিল । আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম যে পাকিস্তানি দল জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য উরিতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে । তারপর আমরা আমাদের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ এবং নজরদারি গ্রিডকে সক্রিয় করি । ওইদিন সকাল ৬:৪০ নাগাদ খারাপ আবহাওয়া সত্ত্বেও,তিন থেকে চার সন্ত্রাসী হাতলঙ্গা এলাকায় এলওসি অতিক্রম করার চেষ্টা করে ।’
তিনি বলেন,’ভারতীয় সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের নিষ্ক্রিয় করতে আন্ডার-ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার (ইউবিজিএল), মাল্টি-গ্রেনেড লঞ্চার (এমজিএল) এবং রকেট লঞ্চার ব্যবহার করেছে । তখন একজন সন্ত্রাসীকে নিরপেক্ষ করা হয়েছিল । দুইজন আহত সন্ত্রাসী তাদের গতিবিধি পরিবর্তন করে । এরপর সকাল ৯:১৫ থেকে দ্বিতীয় দফায় দফায় দফায় গুলি চালানো হয়, যা প্রায় আধা ঘন্টা ধরে চলতে থাকে এবং দ্বিতীয় সন্ত্রাসীকে নিরপেক্ষ করা হয় ।’
ব্রিগেডিয়ার ধিলোন বলেছেন, তৃতীয় আহত সন্ত্রাসী নিকটবর্তী পাকিস্তানি পোস্ট থেকে গুলি চালানোর সূযোগে পালিয়ে যায় । পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পোস্টটি তার পালানোর সুযোগ করে দিতে ফায়ার সাপোর্ট দিয়েছিল এবং আমাদের দিকে গুলি চালাতে শুরু করে । তারা আমাদের কোয়াডকপ্টার গুলিতেও গুলি চালায়। আমাদের অনুমান অনুযায়ী, আহত সন্ত্রাসী পাকিস্তানি পোস্ট থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে সাধারণ এলাকায় আত্মহত্যা করেছে । আবহাওয়া খুবই খারাপ । তবে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেই এলাকায় অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে ।’
তিনি বলেন,’অভিযানে পাকিস্তানের তিন সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে এবং দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । এই ঘটনাতেই প্রমাণিত যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের সমর্থন করে এবং তাদের অনুপ্রবেশের জন্য পূর্ণ সমর্থন দেয়। এটিও প্রমাণ করে যে কিভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কাশ্মীরে শান্তি বিঘ্নিত করার সাথে জড়িত ।
ব্রিগেডিয়ার পি এম এস ধিলন বলেছেন,সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে একটি একে-৪৭ এবং একে-৭৪ সাতটি ম্যাগাজিন, একটি পাঁচ কেজি আইইডি, কিছু গোলাবারুদ, একটি চীনা পিস্তল এবং কিছু গ্রেনেড এবং ভারতীয় ও পাকিস্তানি মুদ্রা উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী । আমাদের অনুমান সংখ্যালঘু এলাকা বা নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনা সহ কিছু সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে আইইডি ব্যবহার করতে চেয়েছিল পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীরা ।’।