আজিজুর রহমান,গলসি(পূর্ব বর্ধমান), ৩১ শে জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসির দুটি ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সিংহভাগ ধানের জমি জলের তলায় ডুবে রয়েছে । যার জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে চাষিরা । গলসি-১ ব্লকের শিড়রাই, উচ্চগ্রাম, বুদবুদ ও লোয়া কৃষ্ণ রামপুর ছাড়াও গলসি-২ ব্লকের মসজিদপুর, ভূঁড়ি, গোহগ্রাম, আদড়া প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে সদ্য রোপন করা ধানের জমি ডুবে রয়েছে জলের তলায়। তাছাড়া কোথাও ডুবেছে ধানের বীজ তলা । কোথাও আবার জলমগ্ন সবজি খেত ও পুকুর। যার জেরে মাথায় হাত পরেছে এলাকার বহু ধান,সবজি ও মাছ চাষিদের । উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মনসা বাউরী জানান, ক্ষতি খতিয়ে দেখার জন্য ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তাদের কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন ।
মসজিদপুর অঞ্চলের চাষি সেখ আতিয়ার জানিয়েছেন, ১০-১৫ দিন আগে বর্ষা শুরু হতেই এলাকার বহু চাষি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিতে শুরু করেছিলেন । কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগে থেকে লাগাতার মুসলধার বৃষ্টি চলছে । যার জেরে সব ধান জমি ডুবে গেছে । ফলে তাদের এলাকার চাষিরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ।
শিড়রাই গ্রামের চাষি সেখ ইমাম নুর হোসেন বলেন, ‘এবারে তবে এত বৃষ্টিপাত হবে ধারনা করতে পারিনি । জলে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে ।’ তিনি জানান, গত বোরো মরসুমেও বৃষ্টির জন্য মাঠে ধান কাটতে পারেননি । চেন হার্ভেস্টিং মেশিন দিয়ে তিনগুণ খরচ করে ধান তুলতে হয়েছে । ফলে লাভ তো দুর প্রচুর লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে এলাকার চাষিদের । ফের এবারেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে তাদের এলাকার বহু চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ।
এদিকে শুধু ধান বা শব্জি চাষিরাই নয়,মাথায় হাত পড়েছে মাছ চাষিদেরও । গলসির-১ ব্লকের মাছ চাষি সন্টু মন্ডল ও আনিসুর মল্লিকরা বলেন, ‘টানা বৃষ্টি হওয়ায় সব পুকুর প্লাবিত হয়ে গেছে । যার জেরে পুকুরের অধিকাংশ মাছ বেড়িয়ে গেছে । ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে ।’ এই অবস্থায় সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের ব্যাবস্থা না করা হলে পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে কাটাতে হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা ।
গলসি ১ নং ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা অরিন্দম দানা বলেন, ‘আমি লোয়াকৃষ্ণ রামপুর, উচ্চগ্রাম, শিড়রাই ও বুদবুদ প্রভৃতিএলাকাগুলি পরিদর্শন করেছি । প্রায় ৬৭৫০ হেক্টর জমিতে সদ্য রোপন করা ধান জমি জলে ডুবে গেছে । এনিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে ।’ অন্যদিকে গলসি ২ নং ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা সরোজ কুমার ঘোষ বলেন, ‘আমার ব্লকের মসজিদপুর, আদড়াহাটী, ভূঁড়ি, গোহগ্রাম এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আলু চাষ বেশি হয় । তাই এই এলাকা গুলিতে কিছুটা আগে ধান রোয়ানোর কাজ শুরু করেন চাষিরা । তাছাড়া সবজি ও মাছ চাষ আছে বেশ কিছু এলাকায় । বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন চলছে । ক্ষতির মোট পরিমান নির্ধারণ করার পর জেলায় রিপোট পাঠানো হবে ।’।