প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৫ অক্টোবর :তৃণমূল নেতার নির্মীয়মান বাড়িতে খোলা হয়েছিল অস্থায়ী তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয় । পুলিশি অভিযান সেখান থেকেই উদ্ধার হল বস্তায় ভরে রাখা ৯ ট তাজা বোমা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শনিবার সকাল থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার অমরপুর গ্রামে। ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে চলে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দ । ওই নির্মীয়মান বাড়ির মালিক সারাফত হোসেনের অভিযোগ, ’তাঁদের ফাঁসাতে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহেমুদ খানের পরিকল্পনায় এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে’। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেহেমুদ খাঁন। ওই নির্মীয়মান বাড়িতে বোমা কিভাবে এল ,কারা রেখেছিল তা পুলিশ
তদন্তে নেমে খতিয়ে দেখছে। পুলিশ ও দমকাল বাহিনীর উপস্থিতিতে বোম ডিসপোজাল স্কোয়াড এদিন বিকালে জামালপুরের দামোদরের চরে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করে।
জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম অমরপুর।এই এলাকার বাসিন্দা সারাফত হোসেন ওরফে হিরু। তিনি এদিন দাবি করেন,তৃণমূল কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন । জ্যোৎশ্রাম অঞ্চলে তিনি দলের হয়ে নেতৃত্ব দেন। তবে তিনি ব্লক তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি মেহেমুদ খাঁনের সঙ্গে দল করেন না।অরবিন্দ ভট্টাচার্য্য ,গৌর মণ্ডল ও প্রদীপ পালের নেতৃত্বে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস দল করেন ।সারফত হোসেন জানান ,তাঁদের পার্টি অফিস না থাকায় অমরপুরে তাঁর নির্মীয়মান বাড়িটি ’জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চল দক্ষিণ জোন কার্যালয়’ হিসাবে আপাতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল । কার্যালয়ের পরিচিতি জানাতে ওই দরজা , জানালা বিহীন ওই বাড়ির দেওয়ালে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ও যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া বড় ব্যানার টাঙান থাকে। সারাফতের অভিযোগে বলেন,’জ্যোৎশ্রীরাম এলাকায় আমাদের সংগঠন যথেষ্টই মজমুত । সেটা মেনেনিতে না পের আমাকে ও আমার সঙ্গে থাকা তৃণমূল কর্মীদের ফাঁসাতে লুকিয়ে বস্তায় বোমা ভরে নিয়েএসে ওই নবনির্মীত বাড়িতে ফেলে রাখানো হয়েছে।মেহেমুদ খাঁনের পরিকল্পনাতেই এই গোটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে সারাফত হোসেন অভিযোগ করেছেন ।’ জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের অপর তৃণমূল নেতা কার্তিক ঘোষ ও গোষ্ঠ মাল অভিযোগে বলেন,’আমাদের জন্য তোলা তুলে খেতে ও লূটপাট চালাতে যাঁদের অসুবিধা হচ্ছে তাঁরাই সারাফত হোসেনের নির্মীয়মান বাড়িতে বোমা রেখে গেছে ।’
জামালপুর নিবসী জেলা বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন,’বালি,কাটমানি ও তোলাবাজির টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে জামালপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দ এখন চরম আকার নিয়েছে । এখন এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীকে ফাঁসাত নিজেদের কার্যালয়ে বোমা রেখে যাচ্ছে । এরপর আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে জামালপুরের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বোমা গুলির লড়াই দেখবে রাজ্যবাসী ।’
যদিও ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন জানিয়েছেন,জামালপুরে তৃণমূলের কোন গোষ্ঠী নেই , গোষ্ঠী দন্দও নেই । তাঁর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে । পুলিশ বোমা উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত করছে । প্রকৃত ঘটনা কি , কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা পুলিশি তদন্তেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ।’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের অন্যতম মুখপত্র দেবু টুডু বলেন,’তৃণমূলের পার্টি অফিস জনসেবামূলক কাজ ও দলীয় কাজের জন্য করা হয়ে থাকে। সেখানে কারা বোমা রাখলো সেটাই আশ্চর্যের । পুলিশকে বলবো ,যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে ।’।