এইদিন ওয়েবডেস্ক,পুরুলিয়া,১৩ নভেম্বর : রবিবার পুরুলিয়া সংশোধনাগারে মৃত্যু হল ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলার তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দি সত্যবান পরামানিকের (৫১)। মৃতের পরিবারের অভিযোগ জেলের মধ্যে তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে । মৃতের স্ত্রী বিমলা পরামানিক ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার দাবি তুলেছেন । যদিও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, সত্যবান পরামানিকের রক্ত শর্করা জনিত সমস্যা ছিল এবং তা থেকেই অসুস্থতার কারনে মৃত্যু হয়েছে তার ।
ঝালদা পুরসভার-২ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকায় বাড়ি সত্যবান পরামানিকের । তিনি একটি ধাবা চালাতেন । অন্যদিকে গত বছর পুরসভার ভোটের পরে ১৩ মার্চ সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থী তপন কান্দু । ঝালদা-বাঘমুণ্ডি রাস্তায় গোকুলনগরের অদূরে রাস্তার উপরেই বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে তাকে কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় । ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর একটি সরকারি হাসপাতালে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছিল । কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় । প্রথম দিকে ঘটনার তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) । গ্রেফতার করা হয় তপন কান্দুর ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দীপক কান্দুকে । একের পর এক ঝাড়খণ্ডের বোকারোর গাইছাঁদ গ্রামের বাসিন্দা কলেবর সিংহ,তপনের দাদা নরেন কান্দু ও ঝালদারই কুটিডি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আশিক খানকে গ্রেফতার করে পুলিশের তদন্তকারী দল । পরে তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর আবেদনের ভিত্তিতে তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে । এরপর তদন্তে নেমে সিবিআই প্রথমে গত বছর ১২ এপ্রিল সত্যবান প্রামাণিককে গ্রেফতার করে । তখন থেকেই তিনি তিনি পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন । তপন কান্দু হত্যাকাণ্ড মামলায় মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয় । কিন্তু আদালতে জমা করা সিবিআইয়ের চার্জশিটে সত্যবান পরামানিকের নাম ছিল বলে জানা গেছে । কিন্তু তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণার আগেই কারাগারের মধ্যে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল সত্যবানে।
জানা গেছে,রবিবার ভোর নাগাদ শারিরীক অসুস্থতার কারনে সত্যবান প্রামাণিককে পুরুলিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ । কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে । এদিকে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দাবি মানতে চাননি মৃতের স্ত্রী বিমলা পরামানিক । তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছে তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতোর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন।।