প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ জুন : জামাইকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে জামাইষষ্ঠীর দিন স্ত্রীর বাপের বাড়িতে আছড়ে পড়লো জন রোষ।জামাই বলরাম মণ্ডলের মৃতদেহ তাঁর শ্বশুর বাড়ির সামনে ফেলে রেখে চললো তাণ্ডব। এমনই ঘটনায় রবিবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের বড় মিত্র পাড়ায়। খবর পেয়ে কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে মৃতর পরিবার ওই বধূ ও তাঁর বাবার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,বছর ৩০ দয়সী বলরাম মণ্ডলের বাড়ি কালনা শহরের মধুবন এলাকায় । ভাব ভালবাসা করে দশ বছর আগে ওই থানা এলাকার বড় মিত্র পাড়ার এক তরুণীকে বিয়ে করেন। তাদের একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। বলরামের পরিবার সদস্যদের কথা অনুযায়ী,বলরামের বিবাহিত জীবন সুখের হয় নি। তার স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলে। তা নিয়ে বলরামের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর অশান্তি লেগে থাকতো।সপ্তাহ খানেক আগে বলরামের স্ত্রী তাঁর বলরামের বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে গেলে স্বামী-স্ত্রীর সংঘাত আরও তীব্র হয়। এমন অবস্থার মধ্যেই ওই যুবককে বিয়ে করে অন্যত্র সংসার পাতার কথা বলরামকে জানায় তাঁর স্ত্রী।এতে বলরাম মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তার পরেও বলরামের স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকজন বলরামকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে মানসিক অত্যাচার চালানো,সবই করতো বলে অভিযোগ পরিবারের ।
মৃতের এক বন্ধুর অভিযোগ,“বলরামের স্ত্রী যে যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ায় সেই যুবকের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সে আপত্তিকর ছবি তোলে । সেই ছবি আবার বলরামের মোবাইলে পাঠানো হয় । সেসব দেখে মানসিক যন্ত্রনায় বলরাম মৃত্যুর কয়েকদিন আগে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেয়। তার মধ্যেও জারি ছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ফোনে হুমকি দেওয়া।”
শনিবার বিকালে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বলরামের ঝুলন্ত মৃতদেহ । রবিবার কালনা মহকুমা হাসপাতাল মর্গে বলরামের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় ।
ময়নাতদন্ত শেষে বলরামের মৃতদেহ হাতে পাওয়ার পর পরিবারের লোকজন মৃতদেহ নিয়ে সোজা র বলরামের স্ত্রীর বাপের বাড়ির সামনে পৌছে যায় । সেখানে বলরামের মৃতদেহ রেখে তারা বলরামের স্ত্রীর বাবার বাড়ি লক্ষ্যকরে ইট, পাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর চালিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। আতঙ্কে এক প্রতিবেশীর বিল্ডিং বাড়িতে তারা আশ্রয় নিলে সেই বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো শুরু করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এইসব করে অবশ্য বলরামের স্ত্রীকে দমাতে পারেনি বলরামের পরিবার পরিজন। বলরামের স্ত্রী পাল্টা মৃতের পরিবারের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে বলরামের স্ত্রী দাবি করেছেন,“তিনি অন্য কোথাও বিয়ে করেননি। তাঁর স্বামী আমাকে ফোন করে হুমকি দিত। গালিগালাজ, হুমকি, এমনকি অ্যাসিড ছুড়ে মারার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন বলরামের স্ত্রী। এক সপ্তাহ আগে স্বামীর নামে কালনা থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ জানানোর কথাও বধূ শুনিয়েছেন।।

