প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ জুলাই : তৃণমূল কংগ্রেসের ’শহীদ দিবস’ পালনের পাল্টা বুধবার ’শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ দিবস পালন করে বিজেপি।আর বিজেপি নেতৃত্ব যখন শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলী দিবস পালনে ব্যস্ত সেই ফাঁকে ‘খেলা হবে’ শ্লোগান তুলে বিজেপি শিবিরে বড়সড় ভাঙন ধরালো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে তৃণমূল নেতূত্ব ।চোদ্দশোর আধীক বিজেপি কর্মী ও সমর্থক এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করলেন। যা নিয়ে তৃণমূল শিবির উৎফুল্ল হলেও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি সন্ত্রাসের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই এখন তৃণমূলের ভিড়তে বাধ্য হচ্ছেন ।
তৃণমূল কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দলের তরফে প্রতিবছর ২১ জুলাই পালিত হয়ে আসছে ’শহীদ স্মরণ দিবস’।পূর্বে কলাকাতায় সমাবেশ করে ’শহীদ স্মরণ’ সভা হলেও এই বছর অতিমারির কারণে দল আর সমাবেশ করে নি ।এই বছর ’ভার্চুয়াল’ মাধ্যম দল শহীদ স্মরণ করেছে ।জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনের প্রাঙ্গনে এদিন ১৯৯৩ সালে নিহত হওয়া শহীদদের স্মরণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । সেই অনুষ্ঠানে হাজির হন ব্লকের চোদ্দশোর বেশী বিজেপি কর্মী ও সমর্থক।তাদের মধ্যে মহিলার সংখ্যাই ছিল বেশী। বড় স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে প্রথম তাদের তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনানো হয় ।এরপর শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠান স্থলেই ওই বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করানো হয় । জামালপুর বিধানসভার বিধায়ক অলোক মাঝি ,ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেহেমুদ খাঁন ও যুব সভাপতি ভূতনাথ মালিক দলত্যাগীদের হাতে তৃণমূলের দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে দলে বরন করেনে ।
মেহেমুদ খাঁন বলেন ,“বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে রাজ্যের অন্যান জায়গার পাশাপশি
জামালপুরের অনেক মানুষজন বিজেপি নেতাদের কথায় বিজেপিতে গিয়েছিলেন । ভোটে বিজেপির ভরা ডুবির পর সেইসব বিজেপি নেতারা নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন । বর্ধমানে থাকা জেলা পার্টি অফিসে প্রায় দিনই ওরা নিজেরা হাতাহাতি মারামারিতে জড়াচ্ছে । দলের কর্মী ও সমর্থকদের দিকে বিজেপি নেতারা এখন ফিরেও তাকাচ্ছেন না।এইসব দেখে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা ঘেন্নায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন ।’
ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি ভূতনাথ মালিক বলেন , ‘তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে চেয়ে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের করা আবেদনের বিষয়টি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব কে জানানো হয় । দলের সবুজ সংকেত মেলার পর এদিন চোদ্দশোর বেশী বিজেপি কর্মী ও সমর্থককে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করানো হয়েছে ।’
বিজেপি ত্যাগীদের মধ্যে মহাদেব মুর্মু এদিন বলেন ,“রান্নার গ্যাস সহ সমস্ত পেট্রোপণ্যের দাম প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে । বাজারে সমস্ত জিনিসও অগ্নিমূল্য । অথচ কেন্দ্রে বিজেপি সরকার এইসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না ।সংসার চালাতে তাঁদের মতো গরিব মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে । তাই ধিক্কারে তারা বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সামিল হতে তাই এদিন তাঁরা সবাই তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করেছেন ।’
জামালপুর বিধানসভার বিজেপি আহ্বায়ক জীতেন ডকাল বলেন ,“মনে প্রাণে কেউ বিজেপি ছাড়েনি ,ছাড়ছেনও না । তৃণমূলের সন্ত্রাসের হাত থেকে বাঁচতে সর্বত্র বিজেপির লোকজন এখন তৃণমূলে ভিড়তে বাধ্য হচ্ছেন । জীতেন বাবু দাবি করেন ,জামালপুরের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি বলেই তিনি মনে করছেন ।।