এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,৩০ অক্টোবর : এরাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হয়ে গেছে । তৃণমূল-সিপিএম- কংগ্রেস এসআইআর-এর বিরোধিতায় কোমড় বেঁধে আসরে নেমে পড়েছে । এসআইআর-এর সমর্থনে একা কুম্ভ বিজেপি ৷ তবে এসআইআর বিরোধীদের মধ্যে বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি সরব হতে দেখা যাচ্ছে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তার ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জিকে । এসআইআর নিয়ে অভিষেককে গতকাল আক্রমণাত্মক দেখা যায় । তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পর্যন্ত আক্রমণ করেন। এদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী “পিসি ও ভাইপো”কে পালটা নিশানা করে বলেছেন,’একটাও বাংলাদেশী মুসলমান অনুপ্রবেশকারীকে রাখা হবে না । যত পারেন চিল্লান, সারাদিন ঘেউ ঘেউ করুন ।’
আজ নিজের নির্বাচনী এলাকা পূর্ব মেদিনীপুরে নন্দীগ্রামের বাড়কাণ্ডপসরায় দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী “পিসি ও ভাইপো”কে নিশানা করে বলেছেন,’ভাইপোর তখন জন্ম হয়েছিল কিনা জানিনা । ২০০২ সালে এসআইআর হয়েছে । ২৬ লক্ষ ভোটার বাদ গেছে । মৃত ভোটার, ভুয়ো ভোটার, বাংলাদেশের মুসলমান পশ্চিমবঙ্গে থাকবে কেন ? ডিটেক্ট, ডিলিট এন্ড ডিপোর্ট৷ একটাও বাংলাদেশী মুসলমান অনুপ্রবেশকারীকে পশ্চিমবঙ্গে রাখা হবে না। যত পারেন চিল্লান, সারাদিন ঘেউ ঘেউ করুন, কোন অসুবিধা নাই । পরিষ্কার কথা । বিহারেও করেছিলেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি ।’
উল্লেখ্য,খড়দহ থানার আগরপাড়ার প্রদীপ কর নামে এক প্রৌঢ়ের আত্মঘাতী হওয়ার পর রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে । তৃণমূল দাবি করেছে যে ওই প্রৌঢ় এসআইআর আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন । এমনকি তিনি নিজের ডাইরিতে একথা লিখে রেখে গেছেন বলে দাবি তৃণমূলের । এমনকি গতকাল মৃতের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসেন অভিষেক ব্যানার্জি । সেখানে দাঁড়িয়েই ‘জাস্টিস ফর প্রদীপ কর’ স্লোগান তোলেন তিনি ।ওইদিন রাতেই গিয়ে প্রদীপ করের ভাইয়ের স্ত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া, পুলিশ সূত্রের খবর যে প্রদীপ করের সুইসাইড নোটের ফরেন্সিক পরিক্ষা হবে।
এদিকে মৃতের পরিবারের একটি স্বীকারোক্তিতে তৃণমূলের দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । কারন, পরিবারের সদস্যরাও জানিয়েছিলেন, প্রদীপ করের ডান হাতের চারটে আঙুল ছিল না, সেক্ষেত্রে তিনি আদৌ লিখতে পারতেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠছে । শুভেন্দু অধিকারীর কথায়,এ তো সাজানো৷ সবাই জানে । গাছ থেকে পড়ে গেলে বা বাজ পড়ে মরলে বলবে এসআইআর এর জন্য ।’ তিনি বলেন,’সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো । হাতের লেখাও ওনার নয় । চিঠিটা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠান । রাজ্য সরকারের ফরেনসিক তো পিসির বানানো৷ ওখানে কি হয় সবাই জানে । সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবে হোক এবং হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে হোক। তাহলে দুধকা দুধ পানি কা পানি হয়ে যাবে ।’
তিনি বলেন,’বারোটা রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হচ্ছে, কারোর চুলকাচ্ছে না শুধু পিসি আর ভাইপোর চুলকাচ্ছে । এটা তো নতুন নয় ।’ পাশাপাশি ফের তিনি শুনিয়ে দেন যে বাংলাদেশি মুসলিমদের এরাজ্যে ঠাঁই হবে না । এই বিষয়ে তিনি বলেন,’মৃত ভোটার থাকবে না । এখানেও(নন্দীগ্রাম) গড়চক্রবেরিয়া, ভুতামোড়, কেন্দ্রাবাড়ির বিভিন্ন বুথে, দাউদপুরের বিভিন্ন বুথে,সামসাবাদে, সব মৃত ভোটারের ভোট দেয় এরা বিকাল বেলায় । কোন হিন্দু বুথে হয় না। এরা করে এখানে । সকালবেলায় গামছা পরে ভোট দেয়, দুপুরবেলায় প্যান্ট পরে ভোট দেয় বিকাল বেলায় লুঙ্গি পরে ভোট দেয় ।’ মমতা ও অভিষেককে নিশানা করে তিনি বলেন,’কেন থাকবে ? আঁতে ঘা লেগেছে এবং বুঝতে পারছে যে যাবে ।’।

