এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়া দিল্লি,২০ এপ্রিল : উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রথম ‘বুলডোজার থিওরি’র প্রয়োগ শুরু করেছিলেন । এই পদ্ধতির সাফল্য দেখে তা প্রয়োগ করা শুরু করে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাট সরকার । এবার ‘বুলডোজার থিওরি’র প্রয়োগ করতে চলেছে উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন(North Delhi Municipal Corporation)। শনিবার জাহাঙ্গীরপুরীতে হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বের হওয়া শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া হিংসায় জড়িতদের সমস্ত অবৈধ নির্মান ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনডিএমসি । সহকারী কমিশনার দ্বারা প্রকাশিত একটি আদেশে জানানো হয়েছে, জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় জবরদখলের বিরুদ্ধে আগামী ২০ এবং ২১ এপ্রিল অভিযান চালাবে উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন । এই কারনে অভিযানের সময় নুন্যতম ৪০০ পুলিশ কর্মী মোতায়েনের জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ।
শনিবার দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরিতে হনুমান জয়ন্তীর দিন সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল । তদন্তে পুলিশ জানতে পারে,ওইদিন সন্ধ্যা প্রায় ৬ টা নাগাদ হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাটি জাহাঙ্গীরপুরির সি ব্লকের জামে মসজিদের কাছে এলে আনসার নামে এক ব্যক্তি তার কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে মিছিলের কাছে এসে বাকবিতণ্ডা শুরু করে । আর তার পরেই হিংসার সৃষ্টি হয় । শোভাযাত্রা লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পাশাপাশি গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ । পালটা পাথরও ছোড়া হয় । এক পুলিশ কর্মীর হাতে গুলি লাগে । পুলিশকর্মীসহ বেশ কয়েকজন আহতও হয় । এই ঘটনায় এযাবৎ ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
জাহাঙ্গীরপুরীর ওই ঘটিনার পর দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখে দাঙ্গায় বাংলাদেশী,রোহিঙ্গা এবং আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতাদের ভূমিকা তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছিলেন দিল্লির বিজেপির প্রধান আদেশ গুপ্তা । পাশাপাশি তিনি অভিযুক্তদের দ্বারা সরকারি জায়গা জবরদখল করে অবৈধ নির্মাণগুলি চিহ্নিত করে তা ভেঙে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিলেন ।
প্রবীণ বিজেপি নেতা রামভীর সিং বিধুরির (Ramvir Singh Bidhuri) কথায়,’ঘটনায় বাংলাদেশি মুসলিম এবং রোহিঙ্গাদের জড়িত থাকার প্রচুর প্রমান আছে । তারা কেজরিওয়াল সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে । তাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ডও করে দিয়েছে আম আদমি সরকার । সরকারিভাবে তাদের বিনামূল্যের রেশন, জল এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে ।’ তিনি ওই সমস্ত মানুষদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বাতিলের পাশাপাশি সরকারি সুবিধা বন্ধের জন্য এলজির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন ।
এদিকে উপদ্রুত এলাকায় জবরদখল উচ্ছেদের জন্য রীতিমতো কোমড় বেঁধে আসরে নেমে পড়েছে উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন । অভিযানের জন্য পিডব্লিউডি,স্থানীয় সংস্থা,পুলিশ, পূর্ত/রক্ষণাবেক্ষণ দপ্তর,স্বাস্থ্য দপ্তর, স্যানিটেশন বিভাগ, ভেটেরিনারি বিভাগ এবং উত্তর DMC-এর এনফোর্সমেন্ট সেল নিয়ে গঠিত বিশেষ যৌথ দখল গঠন করা হয়েছে ।
এদিকে এএপি নেতা আমানতুল্লাহ খান একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, ‘এমসিডিকে ব্যবহার করে রমজান মাসে দিল্লির শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে চায় অমিত শাহ ও বিজেপি । এমসিডিকে ব্যবহার করে জাহাঙ্গীরপুরীতে জবরদখল উচ্ছেদের নামে বুলডোজার ব্যবহার করে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে হয়রানি করার ফরমান জারি করা হয়েছে । এতে গোটা দেশে অস্থিরতার সৃষ্টি হবে ।’।