এইদিন ওয়েবডেস্ক,পটুয়াখালী,২৮ নভেম্বর : ইসলাম ছাড়া কোনো ধর্মই নাকি নারীদের অধিকার দেয়নি বলে দাবি করলেন বাংলাদেশ জামাত ইসলামির এক নেতা । ওই নেতার নাম ডঃ শফিকুল ইসলাম মাসুদ । তাকে পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে প্রার্থী করেছে জামাত । তার কথায়, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া নারীর প্রকৃত মর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তিনি বলেছেন, “ইসলাম ব্যতীত কোনো ধর্ম বা কোনো মানব রচিত বিধান নারীদের সম্মান ও মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি ।”
পাশাপাশি মাসুদকে ইসলাম নিয়ে অনেক গালভরা মন্তব্য করতে শোনা যায় । শতাধিক মহিলার উপস্থিতিতে তিনি বলেন,আল্লাহর বিধানে নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ—সকল মানুষের মাঝে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়; তাই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হলে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা ছাড়া বিকল্প নেই। মানব রচিত আইন ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে তার এই মন্তব্যের পর তালিবানের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে আফগান নারীদের দুরবস্থার কথা মনে পরিয়ে দিচ্ছেন অনেক । আসলে, বর্তমানে আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামি শরিয়া শাসন লাগু করা হয়েছে । যেখানে মেয়েদের আপাদমস্তক বোরখা পরা বাধ্যতামূলক করেছে তালিবান । মেয়েদের একা ভ্রমনের উপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা এবং কেড়ে নেওয়া হয়েছে শিক্ষার অধিকার । আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি তালিবানের বিরুদ্ধে আফগান নারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে । বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর কালাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির ছিলেন ডঃ শফিকুল ইসলাম মাসুদ । তার এই বক্তব্যের পর স্থানীয় বাসিন্দারা জামাত ইসলামিকে কটাক্ষ করছে । তবে হামলার আশঙ্কায় তারা কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি ।
প্রসঙ্গত,আগামী বছর বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের মতই বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমরা বিভিন্নভাগে বিভক্ত । সাত শতাংশ হিন্দু ভোটাররা অনেক আসনে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় । তাই জামাত ইসলামি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির(বিএনপি) মত কট্টর ইসলামি চরমপন্থী দলগুলি হিন্দু ভোটারদের নিজেদের ভোটবাক্সে টানতে ভরপুর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । সেই লক্ষ্যে “ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা” কথা বললেও ডঃ শফিকুল ইসলাম মাসুদ কালাইয়া ইউনিয়নের রাধা মন্দিরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে মন্দিরের সভাপতি সুভাস মণ্ডলসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। আলোচনা সভায় তিনি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর সহাবস্থান, নিরাপত্তা ও পারস্পরিক সম্মান রক্ষা সম্পর্কেও জ্ঞানগর্ভ কথা বলেন। বাউফল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিনব্যাপী প্রচারণা, মতবিনিময় ও জনসংযোগ কর্মসূচিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয়, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেয় ।।

