জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,১১ জুলাই : অতীতে বারবার প্রমাণ পাওয়া গেছে, এখনো যাচ্ছে – আপন খেয়ালে চলা খেয়ালি প্রকৃতির কাছে মানুষ বড় অসহায়, হাতের পুতুল। মানুষের তৈরি করা কোনো নিয়মকানুন বা তিথি নক্ষত্র মেনে সে চলতে আদৌ অভ্যস্ত নয়। সরকারিভাবে বর্ষা ৮ ই জুনের দু’একদিন আগে এলেও চাহিদা অনুযায়ী মানুষের প্রত্যাশা আদৌ পূরণ করেনি । দ্রুত যে করবে তারও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও আশা জাগিয়ে সেজে উঠছে ভালই।
অথচ প্রত্যাশা জাগিয়ে টি-২০ ক্রিকেটের ধাঁচে শুরুটা ভালই হয়েছিল। কিন্তু ইনিংসের মাঝখানে এসে কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেলো। কার্যত ব্যাটে পর্যাপ্ত রান অর্থাৎ বৃষ্টি নাই। আর এতেই চাষীদের মাথায় হাত। একই পরিস্থিতি সার ব্যবসায়ীদের।
আমন ধান চাষের ভরা মরশুম চলছে। অথচ ‘ধানের গোলা’ পূর্ব বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ জায়গায় সেই জনপ্রিয় গানের মত ‘বৃষ্টির দ্যাখা নাইরে, বৃষ্টির দ্যাখা নাই।’ এদিকে ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট ওভার অর্থাৎ চাষের মরশুম শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে। যদিও গত কয়েক বছর ধরে কোথাও কোথাও আমন ধান রোপণ করতে প্রায় ভাদ্র মাস শেষ হয়ে গেছে। এতে অবশ্যই উৎপাদন কম হয়েছে। চাষীদের এবারও হয়তো সেরকমই হবে।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু কিছু জমিতে ধান রোপণ হলেও মঙ্গলকোট, আউসগ্রাম, গলসী, ভাতার প্রভৃতি ব্লকের মাঠ খাঁ খাঁ করছে। বৃষ্টির ব্যাপারে আবহওয়া দপ্তরও সেভাবে আশার বাণী শোনাতে পারছে না। আবার বৃষ্টি না হলে সেচ খালগুলোতে চাষের জন্য জলও পাওয়া যাবেনা। সব মিলিয়ে এলাকার চাষীরা খুবই চিন্তিত।
গলসীর চাষী সমজান সেখ, রাজু সেখ প্রমুখদের বক্তব্য, ‘বৃষ্টি যদি না হয় তাহলে চাষ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। রাসায়নিক সারের দাম সহ চাষের অন্যান্য খরচ বেড়ে গ্যাছে। এরপর যদি জল কিনে চাষ করতে হয় তাহলে চাষের খরচ উঠবেনা। চরম সমস্যায় পড়ে যাব। তাদের আশা দু’একদিনের মধ্যে ভাল বৃষ্টি হবে এবং তারা চাষও করতে পারবে।’
মঙ্গলকোটের চাষী জয়দেব পাল, দেবাশীষ মণ্ডলদের বক্তব্য,’গত কয়েকবছর ধরে সময়মত বৃষ্টির অভাবে ধান উৎপাদন যথেষ্ট কম হচ্ছে। এখন কৃষিবিজ্ঞানীরা যদি কম জলে ধান চাষের উপযুক্ত কোনো বীজ উৎপাদন করতে পারেন তবেই সুরাহা। নাহলে আগামী দিনগুলো আমাদের দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়েই কাটাতে হবে ।’।