এইদিন ওয়েবডেস্ক,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান),১৪ অক্টোবর : পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের IQ সিটি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার সল্ট লেকে রাজ্য বিজেপি কার্যালয় সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একটা চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন । তিনি বলেছেন,’আমি আবারও বলছি যে ইতিমধ্যে ডাক্তারি ছাত্রীর শরীরে পাওয়া বায়োলজিক্যাল পার্টস বয়ফ্রেন্ডের বলে চালানো শুরু করেছে পুলিশ । যাতে বিশেষ সম্প্রদায়ের চারজন অতিরিক্ত আছে তারা আল্টিমেটলি যেন সাজা না পায় । শুধুমাত্র একজনার উপর দিয়ে যাবে । ঠিক আরজি করের ঘটনায় ধৃত সঞ্জয়ের মত ।’ তিনি আরও বলেছেন,’অলরেডি হুইস্পার ক্যাম্পেনিং স্টার্টেড । লিড বাই দ্য পুলিশ এন্ড আই কিউ সিটি, যারা ৮০ লক্ষ টাকা নিয়েছে । সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালা ইস দ্য কাল্প্রিট । বায়োলজিক্যাল পার্টস একমাত্র বয়ফ্রেন্ডের ! কোন রাজ্যে আপনি বসবাস করছেন ভেবে দেখুন । কিছু বলার নেই ।’
তবে শুভেন্দুর কথামতো “হুইস্পারিং ক্যাম্পেন” নয়, এবারে পুলিশ দাবি করল যে ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী ওই মেডিক্যাল পড়ুয়া ছাত্রীকে শুক্রবার রাতে তার ওয়াসিফ আলি ধর্ষণ করেছিল। এই বিষয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন যে এখন পর্যন্ত যা টেকনিক্যাল প্রমাণ মিলেছে এবং নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, একজন ধর্ষণ করেছে। বাকিদের কার কী ভূমিকা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সহপাঠীর আচরণ সন্দেহের উর্ধে নয়। ওকে আমরা বার বার জেরা করছি। ওর কী ভূমিকা তা নিশ্চিত ভাবে জানার পরে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ হবে ।’
কিন্তু পুলিশ কমিশনারেট ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে থাকা সব অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরেও সহপাঠীকে গ্রেফতার না করার জন্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল । পুলিশের কাছে সহপাঠীর আচরণ নিয়ে আগেই সন্দেহ ছিল। নির্যাতিতার বাবার দায়ের করা অভিযোগপত্রে তার মেয়ের সহপাঠী ওয়াসিফ আলিকে মূল অভিযুক্ত বলেছিলেন । তারপরেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের এত বিলম্ব কেন ? এই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে ।
গতকাল শুভেন্দু অধিকারী আরও অভিযোগ তোলেন যে ‘সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো মেডিকেল রিপোর্টের কপি পরিবারকে দেয়নি পুলিশ ।’ যদি তার দাবি সত্যি হয় তাহলে কেন মেডিকেল রিপোর্টের কপি পরিবারকে দেওয়া হল না ? বিভিন্ন মহল থেকে এই প্রশ্নও উঠছে এখন ।
দুর্গাপুর গনধর্ষণের ঘটনায় নির্যাততার সহপাঠী ওয়াসিফ আলিকে গ্রেপ্তারের পর এই মামলায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬ জনে । এর আগে পুলিশ বিজড়া ডাঙাপাড়ার শেখ রিয়াজউদ্দিন, ফিরদৌস শেখ, নাসিরুদ্দিন শেখ ওরফে সম্রাট, সফিক শেখ এবং বিজড়া বাউড়িপাড়ার অপু বাউড়িকে গ্রেফতার করে। বিরোধী দলনেতা গতকাল বহু চর্চিত দুর্গাপুরের IQ সিটি মেডিক্যাল কলেজের মালিক সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালাকে “ডেঞ্জারাস লোক” বলে অবিহিত করেন । ‘মনি গ্রুপের সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালা তৃণমূলের একজন ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট ফাইনান্সার’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি । তাহলে কি তিনি অলক্ষ্যে থেকে তার কলেজের এক ছাত্রীর গনধর্ষণের ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন ? যদিও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি শুভেন্দু অধিকারী । তবে নির্যাতিতার বাবা সিবিআই তদন্তের দাবি করলেও শুভেন্দু চাইছেন ঘটনার তদন্ত পুলিশই করুক।।

