একদিন ওয়েবডেস্ক,নিউইয়র্ক,২৯ জানুয়ারি : করোনার বিধিনিষেধ ঠিকঠাক মেনে চলে বিশ্বের সমস্ত দেশগুলির কাছে অবিলম্বে স্কুল খোলার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ (United Nations International Children’s Emergency Fund)। শুক্রবার ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এক বিবৃতিতে আহ্বান জানিয়েছেন, ‘বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে । কিন্তু শিশুদের শিক্ষাকে আমরা আরও ব্যাহত করতে পারি না । তাই সমস্ত দেশের সরকারের কাছে আমরা স্কুল খোলা রাখার জন্য অনুরোধ করছি । স্কুলগুলো পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত । কোনও শিশু যেন পিছিয়ে না থাকে সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে । প্রতিটি শিশুকে ফের স্কুলে ফেরাতে আমাদের সাহসী পদক্ষেপের প্রয়োজন । প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষা,স্বাস্থ্য,পুষ্টি সহায়তা, সুরক্ষা এবং অন্যান্য মূল পরিষেবারগুলির উপর বিশেষভাবে আমাদের নজর দিতে হবে ।’
পাশাপাশি শিক্ষার বিপর্যয় এড়াতে এবং শিশুদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে ইউনিসেফের তরফ থেকে হেনরিয়েটা ফোর কতকগুলি সুপারিশ করেছেন । তার মধ্যে,শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের অবিলম্বে টিকা দেওয়া ও প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মী ও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯-এর টিকাদানের পরপরই এই টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের সম্পূর্ণরূপে সমর্থন ও অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে ।
সুপারিশে বলা হয়েছে,স্কুলগুলো পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত । তাই কোভিড-১৯ ঝুঁকি প্রশমনের ব্যবস্থাগুলো নিয়েই স্কুলগুলোকে খোলা রাখতে হবে । সেই সঙ্গে ডিজিটাল সংযুক্তির পিছনে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে । প্রতিটি শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে । এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি কমিউনিটির প্রান্তিক শিশুদের ওপর বিশেষ লক্ষ্য রেখে কিছু বিষয়ে বিস্তৃত সহায়তা প্রদান করা। যেমন শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, মানসিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসহায়তা, সুরক্ষা ও অন্যান্য পরিষেবাগুলি যথাযথ যোগান দেওয়া ।
ইউনিসেফের তরফ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে,অগ্রাধিকারপ্রাপ্য জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি সুরক্ষিত করার পর এবং টিকার যথেষ্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে ইউনিসেফ শিশুদের টিকাদানকে সমর্থন করে। সশরীরে স্কুলে যাওয়ার জন্য টিকাদানকে পূর্বশর্ত করবেন না। কোভিড-১৯ টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে সশরীরে স্কুলে যাওয়ার শর্ত আরোপ করলে তা শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ না পাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইউনিসেফ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের টিকাদান ছাড়াই স্কুলগুলো খোলা রাখার এবং কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কৌশল যাতে পড়াশোনা ও সামাজিক জীবনের অন্যান্য দিকে শিশুদের অংশগ্রহণকে সহজতর করে, তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করে ।
পরিশেষে বলা হয়েছে, সংকটময় পরিস্থিতিতে সব সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থায় যে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, তা আমরা স্বীকার করি । তবে এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি খুবই বেশি। শিশুদের স্কুলে রাখার জন্য সম্মিলিতভাবে আমাদের পক্ষে সম্ভব সবকিছু করতে হবে ।।