এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৮ মার্চ : বাড়ির উঠানে বাবার মৃতদেহ ১৬ ঘন্টা ধরে ফেলে রেখে সম্পত্তি ভাগাভাগি করল ৯ সন্তান । শেষে ১৬ ঘণ্টা পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে মৃতদেহ কবরস্থ করা হয়। ঘটনাটি বাংলাদেশের যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের পূর্বপাড়ার । হতভাগ্য বাবার নাম হাবিবুর রহমান বিশ্বাস (৭২)। বুধবার (২৬ মার্চ) ভোর ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয় । রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়ির উঠানে ফেলে রেখে রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে প্রথমে সম্পত্তির ভাগাভাগি করে নেয় বৃদ্ধের ৯ সন্তান ৷ সম্পত্তির ভাগাভাগি নিষ্পত্তি হওয়ার পর দেহটি কবরস্থ করা হয় । অবশ্য কবরস্থ করার সময় বৃদ্ধের ছেলেমেয়েদের হাউহাউ করে কাঁদতেও দেখা গেছে ।
হাবিবুর রহমান বিশ্বাস ছিলেন পেশায় কৃষক । তার চার স্ত্রী ও ৯ সন্তান রয়েছে । দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি ছোট স্ত্রী ও তার ছোট ছেলে সোহেল বিশ্বাসের সঙ্গে কোটা গ্রামে বসবাস করতেন। মৃত্যুর পূর্বে ছোট স্ত্রীর নামে ৮৩ শতাংশ জমি লিখে দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে কয়েকবার সালিশি সভা বসেছিল । কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হাবিবুরের মৃত্যুর খবর শুনে সকালে বাড়িতে আসেন ছেলে আতাউর রহমান, সুমন, আনোয়ার ও হাফিজুর।
জমিজমার বিরোধ না মেটা পর্যন্ত বাবার মৃতদেহ কবরস্থ করতে বাধা সৃষ্টি করে তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসীকে ডেকে বাড়ির উঠানের এক পাশে সালিশি সভা বসানো হয়। এ সময় উঠানে খাটিয়ার ওপর মৃতদেহ পড়ে ছিল। মৃতের ছোট ছেলে সোহেল বিশ্বাস বলেন, ‘বাবার কবর পর্যন্ত খুঁড়তে দেয়নি তারা। আমার মায়ের নামে লিখে দেওয়া ৮৩ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ৫০ শতাংশ সৎ ভাইয়েদের নামে লিখে দেওয়ার শর্তে মুচলেকা দেওয়ার পর কবর খুঁড়তে ও দাফন করতে দেয় তারা। মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা পর বাবার মৃতদেহ দাফন করতে হয়েছে। আল্লাহ ওদের বিচার করবেন।’
ইউপি মেম্বার কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘জমিসংক্রান্ত বিরোধ সালিশির মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। রাত ১০টার পর মৃতদেহের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।’ চলিশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান বলেন,মৃতদেহ ফেলে রাখার ঘটনা দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পর আমার প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসী সালিসের মাধ্যমে তাদের পারিবারিক সমস্যার মীমাংসা করেছেন।’।