এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৫ অক্টোবর : এবারের আশ্বিন মাসের নবরাত্র বা শারদোৎসব আদপেই নির্বিঘ্নে কাটেনি । দুর্গাপূজা ঘিরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসার খবর পাওয়া গেছে । বাহরাইচে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। কিন্তু এখনো হিংসা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও, তেলঙ্গানা,পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক এবং ঝাড়খণ্ডে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে ।
ইউপির বাহরাইচে দেবীদুর্গার ভাসানের শোভাযাত্রার সময় গুলিতে এক হিন্দু যুবকের মৃত্যুর আগে তেলেঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদ জেলার মুথ্যালাম্মা মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে । এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভাঙচুরের ঘটনার পর শুরু হয় বিক্ষোভ। জেলার মন্ডা মার্কেট বিভাগে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ বিজেপি নেত্রী মাধবী লতাকে হেফাজতে নেয়। মন্দিরে পৌঁছেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিষাণ রেড্ডি। এলাকা ঘিরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গে দুর্গা প্যান্ডেলে ভাঙচুর : মহাষ্টমীর দিন কলকাতার গার্ডেনরিচের একটা পুজো মণ্ডপে ঢাক ও মাইক বাজানোর জন্য হামলার ঘটনা ঘটে । এরপর ১৩ হাওড়া জেলার শ্যামপুর এলাকায় একটা পুজো প্যান্ডে হামলা হয় । বিজেপির দাবি, এই সময়ে দেবী দুর্গার মূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই প্রসঙ্গে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট লিখেছেন । তিনি বললেন,’শ্যামপুর থানা থেকে ফেরার সময়, একদল দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালায় এবং দুর্গাপূজা প্যান্ডেল ভাঙচুর শুরু করে। তারা শ্যামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পূজা প্যান্ডেলে প্রতিমাতে আগুন দেয় এবং অন্যান্য প্যান্ডেলও ভাঙচুর করে। তাদের মধ্যে কিছু পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ জেলার শ্যামপুর থানার অন্তর্গত এলাকায়। শুভেন্দু অধিকারী পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান।
কর্ণাটকে সাম্প্রদায়িক হিংসা :
১৩ অক্টোবর কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলা থেকে দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। রাতে দেবী দুর্গার প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছে, ২টি বাইক ও ১টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তার ঠিক একদিন আগে মহাসি এলাকা থেকেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় বিরোধের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, মহারাজগঞ্জ এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচে সাম্প্রদায়িক হিংসা :
উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ থেকেও সাম্প্রদায়িক হিংসার খবর পাওয়া গেছে। গত ১৩ অক্টোবর এখানকার হরদী এলাকায় দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় ডিজে বাজানো নিয়ে বিরোধ হয়। এর পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পাথর ছোড়া ও অগ্নিসংযোগের পর গোলাগুলিও হয়। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় ২২ বছর বয়সী রাম গোপাল মিশ্র নামে এক যুবকের মৃত্যু হয় । এরপরই মৃতের বাড়িতে বিপুল ভিড় জমে যায়। জনতা নাকওয়া গ্রামে পৌঁছে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত একটি সমাধি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের গাড়োয়ায় হিংসা :
১৩ অক্টোবর, ঝাড়খণ্ডের গাড়োয়াতে একই রকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। প্রতিমা বিসর্জনের সময় গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। যে পথে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়েছিল সেই পথ দিয়েই প্রতিমা নিয়ে যেতে চেয়েছিল গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও লাঠিচার্জ করে।।