এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,২৫ মার্চ : প্রতি বছর ২১ শে মার্চ নববর্ষ উদযাপন করে আফগানিস্তানের মানুষ । উদযাপনটি ১৩ দিন ধরে চলে । আফগানিস্তানের সমস্ত প্রদেশ থেকে শত শত দর্শনার্থী নওরোজ উদযাপন করতে বলখ(Balkh) প্রদেশের প্রাদেশিক কেন্দ্র মাজার-ই-শরীফে (Mazar-e-Sharif) জড়ো হত । দর্শনার্থীরা মূলত বালখ প্রদেশের কেন্দ্রে অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত আলীর (Hazrat Ali) মন্দির মাজার-ই-সখী (Mazar-e-Sakhi) পরিদর্শন করতে আসতো । সেই কারনে বালখকে নওরোজ (Nawroz) উদযাপনের কেন্দ্রস্থল বলে মনে করা হত । কিন্তু ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালিবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে চিত্রটা বদলে গেছে । তালিবান সকল নাগরিককে নওরোজ উদযাপন করতে নিষেধ করেছে এবং এটাকে হারাম বলে ঘটনা করেছে । যে কারনে আফগানিস্তানের অন্যতম প্রধান উৎসবের দিন বাড়িতে বসেই কাটাতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে । ২১ শে মার্চ মাজার-ই-শরীফও ছিল শুনশান । তালিবানের ভয়ে কেউই মাজার-ই-শরীফ মুখো হয়নি । মাজার-ই-শরীফের বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে বিগত দু’বছর ধরে এই উৎসব উদযাপন বন্ধ আছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়,’এই দিনে মানুষ নতুন জামাকাপড় পরত,ঘর পরিষ্কার করত,বাড়িতে বিভিন্ন মিষ্টি তৈরি করা হত এবং বিকেলে বাড়ির বাইরে গিয়ে নওরোজ উদযাপন করত । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত । এলাকার ব্যবসায়ীরা সেই অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন । বলখের রাবিয়া-বালখি বাজারে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র মহিলা সঙ্গীত শিল্পিরা সঙ্গীত পরিবেশন করতেন । আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রজাতন্ত্রের শাসনকালে এই বাজারটি গৃহস্থালীর পণ্য ও হস্তশিল্পের প্রদর্শনীর আয়োজন করত । কত আনন্দ করতাম আমরা ।’
তিনি বলেন,’তবে এখন আর সেরকম কিছু নেই, তালিবানরা সব কিছু চুপ করিয়ে দিয়েছে । তালিবান বলেছে নওরোজ উদযাপন করা হারাম । তাই তারা এই উৎসব উদযাপন করতে নিষেধ করেছে। সেই কারনে আমরা নওরোজের প্রতি আবেগ হারিয়ে ফেলেছি ।’
তবে শুধু নওরোজই নয়,অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রতিও তালিবানের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে । ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই সঙ্গীত শিল্পিদের বাড়ি বাড়ি ঢুকে বাদ্যযন্ত্র ভেঙে দিয়ে এসেছিল তালিবান জঙ্গিরা । তারপর থেকে তালিবানের ভয়ে গানবাজনা শিকেয় তুলে জনমজুরির কাজ শুরু করে দেন আফগান শিল্পিরা । যে কারনে আফগানিস্তানের সঙ্গীত শিল্পিরা আজ কঠিন দারিদ্রের মুখে পড়েছেন ।।