এইদিন ওয়েবডেস্ক,ওয়াশিংটন,২১ মে : রবিবার ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য অঞ্চলে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি । দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং অন্যান্য ইরানি কর্মকর্তাদেরও । ‘তেহরানের কসাই’ বলে কুখ্যাত ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে নিপিড়ীত ইরানি নাগরিকরা আতসবাজি ফাটিয়ে দিনটি উদযাপন করেছে । কিন্তু শোক পালন করেছে জাতিসংঘ । আর এতে বেজায় চটেছেন নেটিজেনরা ।
জাতিসংঘের শোক পালনের ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে ড্যারেন গ্রিমস নামে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন,’২৬,০০০ মানুষকে হত্যা করেছে, ইরানে শিশু ও নারীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে,৭০ লক্ষ সিরিয়ানকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করেছে, ইসরায়েলে ৭ অক্টোবরের গণহত্যার অর্থায়ন ও পরিকল্পনা করেছে, ইয়েমেন-গাজা এবং ইরাকে সন্ত্রাসীদের সমর্থন করেছে এবং “আমেরিকা মৃত্যু হোক” স্লোগান দিয়েয়। তারপর, একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান এবং জাতিসংঘ এক মিনিট নীরবতার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে – আপনার শিকারদের জন্য নয়, আপনার শোক জানাতে। করদাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত জাতিসংঘের এই প্রহসন, তারা কি নৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে !’
পল এ সিজিপুলা লিখেছেন,’মার্কিন সিনেট এখন মৃত ইরানি প্রেসিডেন্ট রাইসির জন্য প্রার্থনা করেছে যাকে প্রায়শই ‘তেহরানের কসাই’ বলা হয়। ইরান আমেরিকাকে ধ্বংস করার জন্য পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে । আমাদের সরকার নির্বোধদের দ্বারা পরিচালিত হয়।’
তবে ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু উদযাপন করতে দেখা গেছে ইসরায়েলের এক রাজদূতকে । জাতিসংঘে ওই রাজদূতকে একটি প্লাকার্ড হাতে ক্যামেরার সামনে দেখা গেছে । যাতে লেখা ছিল, “ইরানের কসাই, তোমার অভাব আমরা অনুভব করছি না” ।
কেন ইব্রাহিম রাইসিকে ‘তেহরানের কসাই’ বলা হত ? আসলে তেহরানের একজন তরুণ প্রসিকিউটর হিসাবে রাইসি তার উপাধি অর্জন করেছিলেন । ইরাকের সাথে ইরানের আট বছরের যুদ্ধের পর ১৯৮৮ সালে রাজধানীতে শত শত রাজনৈতিক বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার তদারকির ভার ছিল রাইসির উপর । বন্দীর দ্রুত এবং নির্বিচারে বিচার করার জন্য,তিনি একটি প্যানেল গঠন করেন, যা “মৃত্যু কমিটি” নামে পরিচিত ছিল । অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদন বলা হয়েছে ইব্রাহিম রাইসির তদারকিতে ৫,০০০ জনের অধিক রাজনৈতিক বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় । তারপর থেকেই ‘তেহরানের কসাই’ বলে কুখ্যাত হয়ে ওঠেন ইব্রাহিম রাইসি। মৃত্যুদণ্ডে ভূমিকা রাখার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাইসি ২০২১ সালে সাংবাদিকদের বলেছিলেন,যদি একজন বিচারক, একজন প্রসিকিউটর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করে থাকেন, তাহলে তার প্রশংসা করা উচিত… আমি গর্বিত যে মানুষের রক্ষা করতে পেরেছি। আমি অধিষ্ঠিত প্রতিটি পদে নিজের যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছি ।’।

