এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৪ জুলাই : জীবিত তিন মামাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে কোটি টাকার পৈতৃক সম্পত্তি দখল ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের ভাগনের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের খারিজা ভাজনী গ্রামের ঘটনা । জানা যায়, তিনবারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত জলধর রায় প্রধানের ছেলে ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান, বজেন্দ্রনাথ রায় প্রধান ও রামগোপাল রায় প্রধান দীর্ঘদিন ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র লক করে দেওয়া হয়। এরপর তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ভাগনে উত্তম কুমার রায় তনু ভুয়া কাগজপত্রে মামাদের ‘মৃত’ দেখিয়ে নিজেকে একমাত্র উত্তরাধিকার দাবি করে জমি দখল ও বিক্রি করে দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের একজন ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান বলেন, ‘আমরা জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। আমার বাবা জলধর রায় প্রধান এই এলাকার তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। আমি নিজে গ্রাম সরকারের প্রধান ছিলাম, স্কুল, মসজিদ, মন্দির ও বাজারে জমি দান করেছি। অথচ আজ আমাদের মৃত দেখিয়ে আমাদের সম্পত্তি দখল ও বিক্রি করা হয়েছে। আমার জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করা হয়েছে, এটি আমার অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা।’
ভুক্তভোগী পরিবারের কথায়, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে মৃত ভাইয়ের স্ত্রী বা সন্তান না থাকলে জীবিত ভাই-বোনেরা উত্তরাধিকার হন। কিন্তু এই তিন ভাই জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ‘মৃত’ দেখিয়ে উত্তরাধিকার হিসেবে ভাগনে জমিগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। এই বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত উত্তম কুমার রায় তনু প্রথমে ফোন ধরলেও সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোন কেটে দেন। পরে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।জমির ক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি উত্তম কুমার তনুর কাছ থেকে জমি কিনেছি। জমির দলিল করার সময় তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর মামারা মৃত। এখন জানতে পারছি, তাঁরা জীবিত এবং তাঁরাই প্রকৃত মালিক।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভবেন্দ্রনাথের পরিবার সমাজসেবা ও শিক্ষা খাতে অনেক অবদান রেখেছে এবং তিনি এখনো এলাকায় আসেন। টেপ্রীগঞ্জ ভূমি অফিসের তহশিলদার দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার চাকরির বয়স ১৯ মাস। আগে কী হয়েছে, জানি না। আমি নতুন এসেছি, কেউ যদি ভুক্তভোগী হয়ে থাকে, তার প্রতিকারও আছে। এখন দাখিলা ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি হয় না।’।
জীবিত তিন মামাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে কোটি টাকার জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নিল গুনধর ভাগনে
