এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ ডিসেম্বর : দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের বিকাশের জন্য ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘বিশ্বকর্মা প্রকল্প’ চালু করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার । এই প্রকল্পের অধীনে হাত ও সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করা ১৮ টি ব্যবসার কারিগরদের পিএম বিশ্বকর্মা সার্টিফিকেট এবং আইডি কার্ড, স্কিল আপগ্রেডেশন, টুলকিট ইনসেনটিভ, ক্রেডিট সাপোর্ট, ইনসেনটিভ ফর ডিজিটাল লেনদেন এবং মার্কেটিং সাপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । গত ৫ ডিসেম্বর সংসদে প্রশ্নত্তোর পর্বে কেন্দ্র সরকারের তরফে জানানো হয় যে এই প্রকল্পের আওতায় গত ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২.৬০ কোটিরও বেশি আবেদন গৃহীত হয়েছে, এবং ২৫.১৭ লাখ আবেদনকারী এই প্রকল্পের অধীনে সফলভাবে নিবন্ধিত হয়েছে ৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ৭,৭৮,০৫৫ নাম নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও মমতা ব্যানার্জির ‘অদক্ষ সরকার’-এর কারনে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জি ।
এনিয়ে সুকান্ত মজুমদার এক্স-এ লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের কারিগররা, বেশিরভাগই ওবিসি হিন্দু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কারণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৭,৭৮,০৫৫ নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও সুবিধাভোগী শূন্য! কারণ? কোনও রাজ্য মনিটরিং বা জেলা কমিটি গঠিত হয়নি। বাংলার কারিগররা আরও ভালো প্রাপ্য।’
পাশাপাশি লকেট চ্যাটার্জি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের কারিগররা, যাদের বেশিরভাগই ওবিসি হিন্দু, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার অদক্ষ সরকারের কারণে। এই সরকার সর্বদাই তাদের কল্যাণকে অবহেলা করেছে এবং সংরক্ষণের সুবিধাও হরণ করেছে, প্রায় সমস্ত মুসলিম জাতিগোষ্ঠীকে ইচ্ছেমতো ওবিসি কোটায় অন্তর্ভুক্ত করে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা, যা কারিগর ও শিল্পীদের উন্নতির জন্য তৈরি, পশ্চিমবঙ্গে ৭,৭৮,০৫৫টি নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও কোনো সুবিধাভোগীর নাম নথিভুক্ত করতে পারেনি। কেন? কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার অত্যাবশ্যক রাজ্য মনিটরিং কমিটি (এসএমসি) এবং জেলা বাস্তবায়ন কমিটি (ডিআইসি) গঠনে ব্যর্থ হয়েছে, যা এই যোজনার বাস্তবায়নের জন্য জরুরি।
এই নিষ্ক্রিয়তা রাজ্য প্রশাসনের অদক্ষতা এবং পশ্চিমবঙ্গের কারিগরদের প্রতি উদাসীনতাকে প্রকট করে।যখন সারা ভারতে এই যোজনা জীবন বদলে দিচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গের কারিগররা রাজ্য সরকারের গাফিলতির কারণে পিছিয়ে পড়ছেন। পশ্চিমবঙ্গ আরও ভালো কিছুর যোগ্য। এখনই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করার এবং পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তোলার। কেন রাজ্যের পরিশ্রমী কারিগররা পিছিয়ে থাকবেন?’
যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন ‘মা-মাটি-মানুষ’ সরকারের তরফে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া চোখে পড়েনি । অন্যদিকে কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে,’উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গ সহ এই প্রকল্পের অধীনে মৌলিক দক্ষতা প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সুবিধাভোগীদের রাজ্য/ইউটি-ভিত্তিক বিশদ পরিশিষ্ট ৩-এ রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই স্কিমের অধীনে মৌলিক দক্ষতা প্রশিক্ষণ নেওয়া সুবিধাভোগীদের জেলাভিত্তিক বিশদ বিবরণ ৪ -এ রয়েছে। (d) এবং (e) : ০২.১২.২০২৪ অনুযায়ী, ক্রেডিট উপাদানের অধীনে ২,২৬,২৭৯ জন সুবিধাভোগীকে ১,৯৫৪.৮০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এর মধ্যে ১,৫৫.০৭৩ জন উপকারভোগীকে ১,২৪১.৫৫ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে বিতরণ করা ঋণের সংখ্যা এবং বিতরণ করা পরিমাণের রাজ্য/ইউটি-ভিত্তিক বিশদ পরিশিষ্ট ৫- এ রয়েছে। প্রকল্পের অধীনে বিতরণ করা ঋণের সংখ্যা এবং বিতরণ করা পরিমাণের বিভাগ-ভিত্তিক বিশদ পরিশিষ্ট ৬-এ রয়েছে ।।