এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাঁথি(পূর্ব মেদিনীপুর),০৫ জানুয়ারী : পশ্চিমবঙ্গে ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি রোহিঙ্গা মুসলমান ঢুকে রাজ্যের জনবিন্যাস পুরো পরিবর্তন করে দিয়েছে । ‘ভাতা লোভী’ হিন্দুদের এনিয়ে সতর্ক করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানালেন যে একই খাতে এরাজ্যের থেকে বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যগুলিতে বেশি ভাতা দেওয়া হয় । পাশাপাশি তিনি ফের বলেন,’পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের হাতে চলে গেছে ।’ আজ রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার রামনগরে প্রতিবাদ সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী ।
‘কন্টাই-কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক নির্বাচনে অবাধ ছাপ্পা, তৃণমূলের সর্বস্তরের দুর্নীতি, হিন্দুদের উপর আক্রমণ ও ‘হিন্দু হঠাও’ শ্লোগানের বিরুদ্ধে’ এদিন বিকেলে বিজেপির প্রতিবাদ সভা হয় রামনগরে । সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । সভা শেষে মঞ্চ থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের ডেমোগ্রাফি পুরো চেঞ্জ হয়ে গেছে । প্রায় ৮০ লক্ষ থেকে এক কোটি রোহিঙ্গা মুসলমান এখানে ঢুকে আমাদের রাজ্য কার্যত দখল করে নিয়েছে । শুধু হিন্দু নয়, পশ্চিমবঙ্গের আদি মুসলিম যারা তারাও জমি, রেশন প্রভৃতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । এই লড়াই ভারতীয়দের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের লড়াই । এরা কেউ শরণার্থী নয়, সবাই অনুপ্রবেশকারী ।’
রাজ্যের ‘ভাতা লোভী’ হিন্দুদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা এবার বুঝুন । ৩৯ শতাংশ তো আমাদের ভোট দিয়েছে, কিন্তু একটা বড় অংশ ভাতার লোভে,বা অন্য কোন কিছুর লোভে ভোট অন্য জায়গায় দিচ্ছেন ।’ সেই সাথে তিনি শুনিয়ে দেন যে একই খাতে পশ্চিমবঙ্গে যে ভাতা দেওয়া হয় তার থেকে অনেক বেশি ভাতা দেওয়া হয় বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে । এই বিষয়ে তিনি বলেন,’বিজেপির শাসিত রাজ্যে তো ভাতা বন্ধ হয়নি বরঞ্চ বেড়েছে । এখানে যেটা হাজার টাকা পাওয়া যায় মহারাষ্ট্রে সেখানে ২১০০ টাকা দেয় । হরিয়ানাও ২১০০ টাকা দেয় । এখানে যেটা হাজার টাকা দেয় মধ্যপ্রদেশে সেটা তিন হাজার টাকা দেয়। এখানে যেটা হাজার টাকা দেয় অসময় সেটা আড়াই হাজার টাকা দেয় ।’শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’কিন্তু সর্বোপরি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই । একজন মন্ত্রী নিজে বলছেন তেত্রিশ শতাংশ হয়ে গেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ হতে হবে।’
হিন্দু ধর্ম নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন,’সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করছি এবং সনাতনীদের বলবো এই বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বিরুদ্ধে অবিলম্বে বিভিন্ন থানায় এফআইআর দায়ের করুন । আমি অন্তত প্রতিবাদে নামবো । যেমন বিধানসভার ভিতরে ফিরহাদ হাকিমকে হাতে গীতা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করিয়েছিলাম, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর হিন্দুধর্ম সম্পর্কে এই যে অপব্যাখ্যা তার বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় নামবো প্রতিবাদ করব এবং হিন্দু সমাজকে বলবো থানায় যাওয়ার দরকার নাই নতুন আইন বিএনএস এর অধীনে মেইল করে এফআইআর করুন ।’ এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম লীগ দুই সরকার চলছে তাই তিনি এইসব কথাগুলো বলতে পারছেন । এটা যদি উনি রাজস্থান বা উত্তরপ্রদেশে বলতেন তাহলে এতক্ষণে ওকে শ্রী ঘরে টেনে নিয়ে যেত ।’
এদিন ফের তিনি দাবি করেন যে পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের হাতে ইতিমধ্যেই চলে গেছে । তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গ যে জঙ্গিদের হাতে চলে গেছে সেটা আমরা বারবার বলেছি । কারণ এখানে যে সরকার চলছে সেটা জঙ্গিদের সরকার । এই সরকার সম্পূর্ণভাবে জঙ্গিদের মদত দেওয়া সরকার চলছে এবং এই সরকারি দলের একাধিক মন্ত্রী হলে নেই সরকারের মুখ । এই দল একটা সময় নিষিদ্ধ সংগঠন সিমির ইমরানকে পাঠিয়েছিল রাজ্যসভায় এবং পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া সংগঠনের সামসেরগঞ্জের অনুষ্ঠানে ফারাক্কার তৃণমূল এমএলএ যোগ দিয়েছিল । এছাড়া সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে দুদিন আগে যে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে সেই বিস্ফোরণের মূল হোতা ফরিদ শেখ তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন ওখানকার পুরসভার যে পুরো প্রধান ইন্দ্রজিৎ বাবুর সামনে দাঁড়িয়ে ‘পিসি জিন্দাবাদ ভাইপো জিন্দাবাদ’ বলছেন ।’।