শ্যামসুন্দর ঘোষ,পূর্বস্থলী(পূর্ব বর্ধমান),২৩ মে : রাঢ় বাংলার অন্যতম প্রধান শৈব তীর্থ হল পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী-২ ব্লকের জামালপুরের বাবা বুড়োরাজ মন্দির । বাবা বুড়োরাজ শিব ও ধর্মরাজ উভয়েই শূন্য নিরঞ্জন এখানে একই মন্ত্রে পূজিত হন ৷ বাবা বুড়োরাজকে অত্যন্ত জাগ্রত বলে মনে করা হয় । দেবতার কাছে মানত করলে দুরারোগ্য ব্যাধির নিরাময় থেকে শুরু করে নিঃসন্তান সন্তানসম্ভবা হয় বলে বিশ্বাস ভক্তদের । জামালপুরের বাবা বুড়োরাজের প্রধান উৎসব হয় বুদ্ধপূর্ণিমার দিন । প্রতি বছর এখানে বসে মেলা। মাসখানেক ধরে মেলা চলে । আজ বৃহস্পতিবার সেই পবিত্র তিথি । তার আগে বুধবার সন্ধ্যা থেকে দেখা গেল পূণ্যার্থীদের ঢল । পূর্বস্থলীর নবদ্বীপ ঘাট থেকে ঘটে গঙ্গাজল ভরে কাঁধে বাঁকে করে সেই জল নিয়ে জামালপুরের বুড়োরাজ মন্দিরমুখী হতে দেখা গেল কয়েক হাজার পূণ্যার্থীকে । তাদের মধ্যে প্রচুর মহিলা পূণ্যার্থীদের দেখা যায় । তীব্র দাবদহের মধ্যে “হর হর মহাদেব” শ্লোগান দিতে দিতে পায়ে হেঁটে এগিয়ে যান পূণ্যার্থীদের দল ।
এদিকে দাবদহ থেকে পূণ্যার্থীদের ক্ষনিকের স্বস্তি দিতে এগিয়ে এল স্থানীয় মুসলিমদের একট সংস্থা…নজরুল শেখ ফ্রেন্ডস ক্লাব । ক্লাবের সদস্যরা পূণ্যার্থীদের হাতে তুলে দেয় ঠান্ডা শরবত, তরমুজের রস ও লাড্ডু । বুধবার সন্ধ্যায় এমনই সম্প্রতির নজির দেখা গেল পূর্বস্থলী-১ ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেলতলা এলাকায় । তবে এবারেই প্রথম নয়,বিগত কয়েক বছর ধরে এই আয়োজন করে আসছে ওই ক্লাবটি ।
জানা গেছে,যার নামে ওই ক্লাব, সেই নজরুল শেখ হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন স্থানীয় নেতা । রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অনুগামী নজরুল শেখ বিভিন্ন সমাজসেবমূলক কর্মকাণ্ডও চালান । তার কথায়,’আমি যাকে দেখে রাজনীতিতে এসেছি, সেই স্বপন দেওনাথই আমায় শিখিয়েছেন যে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ । আমি ওনার এই নীতিকেই মেনে চলার চেষ্টা করি ।’ তিনি বলেন, ‘বাবা বুড়োরাজের ভক্তরা নবদ্বীপ ঘাট থেকে বাঁকে করে জল নিয়ে যায়, খুবই কষ্ট হয় তাদের,তাই তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে আমরা প্রতিবছরই জলসত্রের আয়োজন করি । এবারেও করেছি । ঠন্ডা শরবত,একটু লাড্ডু, তরমুজের রস প্রভৃতি দিয়ে পূণ্যার্থীদের একটু সাহায্য করেছি মাত্র ।’ তিনি আরও জানান যে এবারে পূণ্যার্থীদের সংখ্যা অনান্য বছরের তুলনায় বেশি । এবারে ৫,০০০ এর অধিক পূণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন ।।