এইদিন ওয়েবডেস্ক,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান),১৩ অক্টোবর : পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীর গনধর্ষণে চতুর্থ ধৃত নাসিরউদ্দিন দুর্গাপুর পুরনিগমের অস্থায়ী কর্মী ও তৃণমূলের ক্যাডার : জানালেন শুভেন্দু অধিকারী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গনধর্ষণে যুক্ত চতুর্থ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন যে চতুর্থ ধৃত নাসিরউদ্দিন দুর্গাপুর পুরনিগমের অস্থায়ী কর্মী ও তৃণমূলের ক্যাডার৷ এমনকি নাসিরউদ্দিনের বাবা তৃণমূলের পোর্টফলিও হোল্ডার বলেও দাবি করেছেন তিনি । তবে সর্বশেষ খবর হল,এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পঞ্চম ধর্ষকও গ্রেপ্তার হয়েছে । এই পঞ্চম অভিযুক্ত হল মূল আসামি ।
এর আগে শুভেন্দু অধিকারী গনধর্ষণের ঘটনায় ৪ আসামির নাম প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন । তার দেওয়া তালিকা অনুযায়ী আসামিরা হল : শেখ নাসিম উদ্দিন, শেখ রিয়াজ উদ্দিন, শেখ ফেরদৌস ও শেখ সফিকুল ৷ তিনি আরও জানান সে মূল অভিযুক্ত শেখ নাসিম উদ্দিন অধরা । এই মামলায় গতকাল ৩ অভিযুক্ত শেখ রেয়াজউদ্দিন, অপু বাউড়ি ও ফিরদৌস শেখ নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । গতকাল আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । রবিবার রাতে চতুর্থজনকে পাকড়াও করে পুলিশ । যার নাম শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন নাসিরউদ্দিন। সোমবার গ্রেফতার হয় পঞ্চম অভিযুক্ত শেখ সফিকুল । এদের মধ্যে নাসিরউদ্দিনের বাড়ি দুর্গাপুরের আই কিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজের পাশেই বিজড়া গ্রামের তিনপাড়ায়। এই ব্যক্তি পুরসভার ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে আবার শোনা গিয়েছে, দুর্গাপুরকাণ্ডে ধৃত শেখ রেয়াজউদ্দিন ৩ বছর আগে আই কিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত। গ্রেফতার হওয়া শেষ দু’জনকে আজই দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলার কথা ।সূত্রের খবর, ধৃতদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি, অভিযোগকারী তরুণীর এক সহপাঠী বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক রাখা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, ওই যুবকের কাছ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে।
এদিকে আজ দুর্গাপুরের নির্যাতিতা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান শুভেন্দু অধিকারী । বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়া। শুভেন্দু সেখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে যান। নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। তবে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নির্যাততার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি বলে অভিযোগ । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁর সঙ্গে কথা না বলার ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন। এমনকি তাঁর অভিযোগ, নির্যাতিতার বাবাকেও চিকিৎসা সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য খোলাখুলিভাবে জানানো হচ্ছে না। শুভেন্দু বলেন,আমরা খুবই উদ্বিগ্ন মেয়েটার চিকিৎসা নিয়ে। তিনি ভুবনেশ্বরের এইমসে রেখে নির্যাতিতার চিকিৎসা চালানোর পক্ষপাতি ।
এদিকে নির্যাতিতার মেডিকেল রিপোর্টও এসে গেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম । যে রিপোর্ট এসেছে তা শিউরে ওঠার মত । গনধর্ষণের প্রমান মিলেছে, নির্যাতিতার যৌনাঙ্গের ভিতরে ও বাইরে ক্ষত রয়েছে,প্রচুর রক্তপাতও হয়েছে বলে জানা গেছে । শুভেন্দু জানিয়েছেন, নির্যাতিতার বাবা-মা তাঁকে ভুবনেশ্বর এইমসে রেখে চিকিৎসা করাতে চাইছেন। সেই ব্যাপারের চিকিৎসকদের পরামর্শের প্রয়োজন । এদিন বিরোধী দলনেতাকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতার বাবা৷
গত শুক্রবার, ১০ অক্টোবর দুর্গাপুরের পরাণগঞ্জে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রাতের খাবার খেতে বের হয়ে গনধর্ষণের শিকার হন । নির্যাতিতা ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা । নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, তখনই তাঁকে ঘিরে ধরে পাঁচজন। সেই সময় তার সঙ্গে থাকা বন্ধুটি তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। নির্যাতিতারকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে পরাণগঞ্জের জঙ্গলের দিকে টেনে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতিতার বন্ধুটির গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তাকেও আটক করে রেখেছে পুলিশ।।

