আজ কবিতায় কোনো কাব্য নয়
আজ কবিতায় বেসুরো ছন্দ লয়-প্রলয়,
সরাসরি বলি, নারী তুমি হও বারুদ —
একটা স্ফুলিঙ্গ, দাউ দাউ দাবানল।
চেনা ছন্দের বাইরে লক্ষ ছন্দপতন
অজানা বৃত্তে ধুকপুক বুক কলিজা উৎপাটন!
একটু বারুদ, একটু স্ফুলিঙ্গ
একটা দাবানল জ্বলে উঠুক…।
নারী, তুমি নও শুধু প্রফুল্ল বা কমল, কামিনী
তুমি নও শুধু শাপগ্রস্তা অহল্যা পাষাণী
যুগে যুগে তুমি সীতা সাবিত্রী দময়ন্তী
তুমি সুমিত্রা, তুমি কুন্তী, তুমি দ্রৌপদী,
ঝাঁসির রাণী লক্ষীবাঈ, দেবী চৌধুরানী;
যুগ যুগ ধরে লাঞ্ছিত বঞ্চিত অপমানিত
তবু তুমি থিরবিজুরী বিদ্রোহিনী অগ্নিস্ফুলিঙ্গ,
তুমি ধাত্রী, তুমি কর্ত্রী, তুমি সৃষ্টি ময়ী।
তোমার তেজ শাণিত বহ্নিশিখা
তোমার রূপ দীপ্ত কিরণমালা
তোমার শক্তি জগৎরক্ষাকারী
তোমার বুদ্ধি বিপদ-সংহারী;
পুরুষ থেকে কমতি কিসে
কেন বা তবে পিছিয়ে থাকবে
জোর-জুলুমের রাজত্বতে?
নারী তুমি হও বারুদ, তুমি হও অগ্নি
জ্বালাও দাবানল…
ধ্বংস করো যত অন্যায় ব্যাভিচার।
আরো একবার জেগে ওঠো অসুরদলনী
জেগে ওঠো নারী, জেগে ওঠো…
জেগে ওঠো নারীশক্তিবাহিনী।
সাগর যদি ফুলে ওঠে দারুণ বিপর্যয়ে
মরণ ঢেউ এগিয়ে আসে বানভাসি প্লাবনে,
আগ্নেয়গিরি হঠাৎ যদি ঘুম থেকে ওঠে জেগে
লেলিহান শিখা দাউ দাউ জ্বলে তীব্র বিস্ফোরণে
রেয়াত করে না কাউকে।
নারী, তুমি ওঠো, তুমি জাগো
হয়ে ওঠো বেপরোয়া সাইক্লোন,
তুলে নাও খড়্গহস্ত, আরেক হাতে চুলের মুঠি
তুমি হও এলোকেশী চামুণ্ডা রক্ত পিশাচিনী।
জানিয়ে দাও —
“সভ্যের মুখোশপরা উন্নয়নের মেকি ধ্বজাধারী
তোরা অসভ্য বর্বর, তোরা নির্মম দস্যু দানব
তোদের রক্তে নিভবে আমার জমে থাকা ক্রোধানল,
সাবধান, তোরা সাবধান…
আমি মহিষমর্দিনী, আমি অসুরদলনী
আসছি আমি, আসছে নারীশক্তিবাহিনী।।”
নারী, তুমি হও বারুদ, তুমি হও অগ্নি
এ সমাজের অগ্নিশুদ্ধ প্রয়োজন অতি।।