এইদিন ওয়েবডেস্ক,নড়াইল(বাংলাদেশ),১৬ জুলাই : বাংলাদেশে ফের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিশানা করল মুসলিম কট্টরপন্থীরা । এবার ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার সাহাপাড়া এলাকায় হিন্দু মন্দির, মুদিখানা দোকান ও বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে জিহাদিরা । জানা গেছে, আঠারো বছরের এক হিন্দু যুবকের একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পরে এই তান্ডব চালায় কট্টরপন্থীদের দল । তারপর অন্ধকার নামতেই দিঘলিয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১২০ টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে তছনছ করে দেয় দুষ্কৃতীরা । সাহাপাড়ার বাসিন্দা দিপালী রানী সাহাসহ অন্তত ১০ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয় । ওই এলাকার একটি কালীমন্দির চড়াও হয়ে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ।
জানা গেছে,সাহাপাড়ার বাসিন্দা পেশায় মুদিখানা সামগ্রীর ব্যাবসায়ী অশোক সাহার ছেলে আকাশ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন । স্থানীয় কট্টরপন্থী মুসলিমদের অভিযোগ,ওই পোস্টের কারনে তাদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত লেগেছে । আর এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার নামাজের পর প্রচুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সাহাপাড়ায় এসে জড়ো হয় । প্রথমে তারা হিন্দুদের বাড়ি লক্ষ্য করে ইঁট পাটকেল ছুড়তে থাকে । এরপর তারা নড়াইলের মধ্যে নামকরা সাহাপাড়ার শ্মশানকালী মন্দিরে ঢুকে মুর্তি ও ভেতরে রাখা আসবাবপত্র ভাঙচুর করে মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয় । অশোক সাহার মুদিখানার দোকানে ভাংচুর চালায় । অন্ধকার নামতেই বেছে বেছে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন ধরাতে শুরু করে ।
জানা গেছে,খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী । উন্মত্ত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে । শেষ পর্যন্ত অনেক রাতের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে । কিন্তু শনিবার বেলা পর্যন্ত একজনও হামলালারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ । উলটে এই ঘটনায় ফেসবুকে পোস্টকারী আকাশ নামে ওই যুবকের বাবা অশোক সাহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে । কিন্তু আকাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে । পুলিশের একতরফা ভূমিকায় ব্যাপক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে লোহাগড়া থানার সাহাপাড়াসহ আশপাশের গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উপ-জেলা নির্বাহী আধিকারিক আজগর আলী ও লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি হারান চন্দ্র পাল শনিবার গ্রাম পরিদর্শন করেন । ঘটনা প্রসঙ্গে নড়াইলের এসপি প্রবীর কুমার রায় বলেন,’আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি । হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে । গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।’।