ভালোবেসে চিকিৎসক ডঃ জুলফিকার আহমেদ জামীকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হন বাংলাদেশের মহিলা চিকিৎসক ডাঃ নন্দিতা সিনহা । দুই সন্তানও হয় তাদের । কিন্তু নন্দিতার শেষ পরিনতি যেকোনো মানুষকে শিহরিত করে দেবে । বাংলাদেশের সমস্ত প্রথম সারির সংবাদপত্রে যাকে নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছিল । বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের তিলপাড়ার বাসিন্দা নন্দিতা সিনহার সেই করুন কাহিনী যা আজও অনেকে ভুলতে পারেনি । ‘লাভ জিহাদ’-এর নতুন ট্রেন্ডের মাঝে ফের একবার ওই বাংলাদেশি হিন্দু মহিলার করুন পরিনতি প্রচারের আলোয় এসেছে ।
ডাক্তারি পড়ার সময়েই নন্দিতা সিনহা ও সিলেট নগরের কেওয়াপাড়ার বাসিন্দা জুলফিকার আহমেদ জামীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল । ১৯৮৬ সালে ভালোবেসে ধর্মান্তরিত হয়ে প্রেমিককে বিয়ে করেন নন্দিতা । ধর্ম আলাদা হওয়ায় নন্দিতার বাপের বাড়ি সেই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি । পরিবারের অমতেই তিনি প্রেমিক জুলফিকার আহমেদ জামীকে নিকাহ করেন । জুলফিকার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন । নন্দিতা সিলেট নগরীর একটি বেসরকারি
হাসপাতালে চিকিৎসা করতেন । বিয়ের পর সিলেট শহরের মিরের ময়দান কেওয়াপাড়ায় (পড়শী-২০১) সংসার পেতেছিলেন নন্দিতা । দুই সন্তানও হয় । এক ছেলে ও এক মেয়ে । কিন্তু তসলিমা নামে এক বিবাহিত মহিলা জুলফিকার আহমেদ জামীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজে আসার পরেই নন্দিতার জীবনে অভিশাপ নেমে আসে ।
তসলিমার তখন দুই সন্তানও ছিল । কিন্তু তাতে কি ? পরিচারিকার সঙ্গে উদ্দাম পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে জুলফিকার আহমেদ জামী । তাকে নিকাহ করেন । বিষয়টি জেনে যান নন্দিতা আহমেদ । তিনি জানতে পারেন যে বিগত ৭ বছর ধরে পরিচারিকার সঙ্গে পরকীয়া চলছে তার স্বামীর । নন্দিতার ছেলে ববিও তখন বড় হয়ে গেছে । মা ও ছেলে মিলে প্রতিবাদ করলে শুরু হয় অশান্তি । শেষে পথের কাঁটা সরাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সাথে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করে চিকিৎসক ডাঃ জুলফিকার । প্রথমে তিনি তসলিমাকে সিলেটের হরিপুরের ফতেহপুর গ্রামে রেখে আসেন । ছেলে ববিকে মাদকাসক্ত আখ্যা দিয়ে নগরীর শাহজালাল উপশহরস্থ মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘প্রতিশ্রুতি’তে ভর্তি করে দেন। তবে ছেলে মাদকাসক্ত ছিল না বলে তখন দাবি করেছিলেন নন্দিতা আহমেদ ।
এরপর জুলফিকার আহমেদ জামীর মূল ষড়যন্ত্র শুরু হয় । স্ত্রী নন্দিতাকে তিনি গৃহবন্দি করে রাখেন । মানসিক রোগী আখ্যা দিয়ে দিনের পর দিন ইনজেকশন পুশ করে নন্দিতাকে বদ্ধ উন্মাদ বানানোর ষড়যন্ত্র শুরু করে ডাঃ জুলফিকার । সর্বক্ষণ ঘরের চার দেয়ালে বন্দি করে রাখা হয় তাকে । এমনকি একাধিক প্রহরী বসিয়ে স্ত্রীকে বন্দিদশায় রেখে জুলফিকার যান হজ পালন করতে সৌদি আরবে । সেই সময় ঘরের রেলিং দিয়ে মুখ বাড়িয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতেন ডঃ নন্দিতা আহমেদ । বিষয়টি নিয়ে কানাকানি হতেই জেনে যান তার ভাই বিজিত সিনহা । নিজের দিদির এই মর্মান্তিক পরিনতি তিনি মেনে নিতে পারেননি । বাড়ির অমতে ধর্মান্তরিত হয়ে নিকাহ করার মত ঘৃণ্য কাজের জন্য তিনি দিদিকে ক্ষমা করে দেন । দিদিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তিনি।
সিলেট কোতোয়ালিতে তিনি একটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ডঃ জুলফিকার আহমেদ জামীর বিরুদ্ধে । অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন,তার দিদিকে নিজের বাড়িতেই বন্দি করে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে রাখা হয়েছে । যে কোনো সময় তিনি মারা যেতে পারেন । অভিযোগ পেয়ে ৪ গ্রুপ সিলেট কোতোয়ালীর একদল পুলিশ কেওয়াপাড়ায় গিয়ে জামীর পাহারাদারদের হাত থেকে নন্দিতা আহমেদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়৷
পরে সংবাদমাধ্যমকে নন্দিতা জানান,দীর্ঘ ৫ বছর ধরে তাকে একটা ঘরে বন্দি করে রেখেছিল তার স্বামী ডাঃ জুলফিকার আহমেদ জামী । তাকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে অচেতন করে পরিচারিকার সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হত । ছেলেকে মাদকাসক্ত সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছিল। ফলে নবম শ্রেণীর পর আর তার লেখাপড়া হয়নি। তার মেয়ের বয়স তখন মাত্র ৭ বছর । শেষ পর্যন্ত বাপের বাড়িতেই আশ্রয় নিতে হয় নন্দিতা আহমেদকে ।
বর্তমানে বাংলাদেশে একের পর এক হিন্দু মেয়ে লাভ জিহাদে ফেঁসে ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনার পর প্রায় চার দশক আগের নন্দিতা আহমেদের ঘটনা ফের নতুন করে প্রচার শুরু হয়েছে । কেউ কেউ মন্তব্য করছেন লাভ জিহাদে ফেঁসে যাওয়া এই সমস্ত মেয়েদের পরিণতি নন্দিতা আহমেদের থেকেও আরও করুন পরিণতি হতে চলেছে । তারা দাবি করছেন নব্য মুসলিম মেয়েদের অধিকাংশ জনার পরবর্তীকালে ঠাঁই হয় পতিতাপল্লীতে । যদিও এই দাবির সত্যতা এইদিনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি ।।