রাহুল রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১১ এপ্রিল : বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ। চৈত্র মাসের শেষ দিকে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে ভগবান শিবেরে গাজন উৎসব। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া-২ ব্লকের গাজন উৎসবগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রীবাটী গ্ৰাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নন্দীগ্রামে নন্দেশ্বরের গাজন উৎসব । কাটোয়া-২ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় গাজন উৎসব হলেও নন্দেশ্বরের গাজন উৎসব ঐতিহ্যপূর্ণ। বহু বছরের পুরনো নন্দেশ্বরের গাজন উৎসব ।
জানা গেছে,এবার সন্ন্যাসী হয়েছেন ৬১ জন গ্রামবাসী । গত ৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে বাবা নন্দেশ্বরের কাছে সন্ন্যাস গ্রহণ পর্ব । সন্ন্যাসীদের যিনি দেখভাল করেন তাঁকে মূলে বলা হয়। এবারে মূলসন্ন্যাসী হয়েছেন জনৈক সোমনাথ রেজ । বুধবার সন্ন্যাসীরা উড়তি নেয়। রাতে নন্দেশ্বর মন্দির প্রাঙ্গণে বোলান গানের আয়োজন করা হয়। গ্রামের যুবকদের সহযোগিতায় একটি দল গঠন করা হয়। এই দলে ১৩ জন সদস্য রয়েছেন । একজন ওস্তাদ দলের নেতৃত্ব দেন । কিছু ছেলে মেয়ে সেজে গান-নাচ করে ।
বোলান গান দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিল মন্দির প্রাঙ্গণে। বৃহস্পতিবার সন্ন্যাসীরা গ্রামের নতুন পুকুরে স্নান করে ভট্টাচার্য্য বাড়ি থেকে শিব ঠাকুরকে নিয়ে আসেন নন্দেশ্বর মন্দিরে। সন্ন্যাসীরা ঢাকের বাজনার তালে নাচতে নাচতে শিব ঠাকুরকে মাথায় নিয়ে গ্রাম পরিক্রমা করেন । দেবতার গ্রাম পরিক্রমা দেখতে গ্রামের মোড়ে মোড়ে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিল। মুলগ্রাম,কুরচিগ্রাম,পোস্টগ্রাম, শ্রীবাটীগ্রামে মানুষদের বাড়ি ঘুরে সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে ফিরে আসার রেওয়াজ রয়েছে বহুকাল ধরে ।
জানা গেছে,আগামীকাল শুক্রবার নন্দেশ্বর মন্দিরে নীলের পুজো অনুষ্ঠিত হবে। নীলের পুজোয় শিবের বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সন্ন্যাসীরা। গ্ৰামে চরক মেলার আয়োজন করা হয়। এই গাজন উৎসব ঘিরে আনন্দে মেতে উঠেছে গ্রামের মানুষেরা ।।