এইদিন ওয়েবডেস্ক,কক্সবাজার,০৫ মার্চ : বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে রোহিঙ্গাদের শিবিরে (ক্যাম্প-১১) রহস্যজনক ভাবে আগুন লেগেছে । রবিবার বিকেল পৌনে তিনটে নাগাদ আশ্রয় শিবিরের ডি-১৫ ব্লকের একটি রোহিঙ্গা পরিবারের রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত । রোহিঙ্গা ঝুপড়িগুলো পরস্পর লাগোয়া হওয়ায় এবং সেই সময় জোরে উত্তরের বাতাস বইতে থাকায় আগুন দ্রুত আশপাশের ঝুপড়িতে ছড়িয়ে পড়ে । ফলে ভয়াবহ আকার নেয় আগুন । নিমেষের মধ্যে ভস্মীভূত হয়ে যায় হাজার দুয়েক বসতি । তার মধ্যে অন্তত ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল,স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, রোহিঙ্গা শিশুদের স্কুল ও ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে ।
বসতিগুলোতে একটার পর একটা গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হতে থাকায় আতঙ্কে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছোটাছুটি করে রোহিঙ্গারা । পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ও কয়েক’শ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে খবর । এদিনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে ঠিকানা হারিয়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে বাধ্য হচ্ছে । আগুনে প্রাণহানি হয়েছে কি না নিশ্চিত না হলেও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ।
এদিকে এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের পিছনে নাশকতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে স্থানীয় বাসিন্দারা । মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন, এই ঘটনায় ১৪-১৫ বছরের এক রোহিঙ্গা কিশোরকে দেশলাইসহ হাতেনাতে ধরা হয়েছে । অনেকে তাকে ঘরে আগুন লাগাতে দেখেছে । এখন ওই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জানা যাবে এই ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে কিনা ।’
তবে ইতিপূর্বেও রোহিঙ্গা শিবিরে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে । সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে রোহিঙ্গা শিবিরে মোট ২২২ টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে । তার মধ্যে ৯৯ টি দুর্ঘটনাজনিত । ৬০টি নাশকতামূলক এবং বাকি ৬৩ টির কারণ অজানা । স্থানীয় রোহিঙ্গাদের অনুমান ওই ৬৩ টি অগ্নিকাণ্ডের পিছনে নাশকতাই কাজ করছে । উল্লেখ্য,২০২১ সালের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী এলাকার তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে ১০ হাজারের বেশি ঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল । জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৬ শিশুসহ ১৫ রোহিঙ্গার ।।